শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২
খামেনির উদ্দেশে ট্রাম্পের চিঠির সঠিকতা নিয়ে সংশয়

ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৯ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব
আয়াতুলস্নাহ আলী খামেনি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করতে চান। এজন্য বৃহস্পতিবার দেশটির নেতৃত্বের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। শুক্রবার ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, 'আমি বলেছি, আমি আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ এটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।' ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি এই বিষয়ে খুব শিগগিরই অগ্রগতি আশা করছেন। তিনি বলেন, 'আমরা ইরানের সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছি। এটা হবে এক আকর্ষণীয় সময়। দেখা যাক কী হয়। তবে আমরা চূড়ান্ত মুহূর্তে রয়েছি। তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পেতে দেওয়া যাবে না।' ফক্স বিজনেসকে ট্রাম্প বলেন, 'ইরানকে দুটি উপায়ে সামলানো যেতে পারে: সামরিকভাবে, অথবা চুক্তির মাধ্যমে। আমি চুক্তি করতে চাই, কারণ আমি ইরানের ক্ষতি করতে চাই না। তারা চমৎকার মানুষ।' ট্রাম্পের চিঠিটি মূলত ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুলস্নাহ আলী খামেনির উদ্দেশে লেখা।

ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত নূর নিউজ ট্রাম্পের চিঠিকে ওয়াশিংটনের 'পুনরাবৃত্তি করা নাটক' বলে উড়িয়ে দিয়েছে। পশ্চিমা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ ইরান ইসরাইল, উপসাগরীয় তেল উৎপাদক দেশগুলোকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এবং আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে। তবে ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে।

ট্রাম্প হয়তো একটি কূটনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে চাইছেন। কারণ মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, ইরান এখন দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো, যেমন: গাজায় হামাস যোদ্ধা এবং লেবাননে হিজবুলস্নাহ- ইসরাইলি বাহিনীর দ্বারা গুরুতরভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আর তেহরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতাচু্যত হয়েছেন। তবে ইরানি কর্মকর্তারা তাদের আঞ্চলিক প্রভাব কমে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। গত বছর ইসরাইলি হামলায় ইরানের বিভিন্ন স্থাপনা, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়। তাই মার্কিন কর্মকর্তারা এবং বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের প্রচলিত সামরিক সক্ষমতা এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।

\হএদিকে পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে এখনও কোনও চিঠি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ইরান। শুক্রবার ইরানের দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোন?ও চিঠি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যদি ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকে, তবে তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও আলোচনায় যাবে না। এএফপি নিউজ এজেন্সিকে আরাঘচি বলেন, যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র তাদের সর্বোচ্চ চাপের নীতি এবং হুমকি বজায় রাখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনও আলোচনায় বসব না। জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের জ্বালানি তেল খাতসহ দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। শুক্রবার ফক্স বিজনেস নিউজে সম্প্রচারিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি আংশিক সাক্ষাৎকার থেকে তার ওই মন্তব্যকে তাৎক্ষণিকভাবে তুলে ধরে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। যদিও এখনও ট্রাম্পের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি খামেনির কার্যালয়। পারমাণবিক আলোচনাসংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পেলে ইরানের ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলী খামেনি কী প্রতিক্রিয়া দেবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে