ধমানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। অ্যারিস্টেটলের মতে, যে সমাজে বাস করে না সে হয়তো পশু, নয়তো দেবতা। এ সমাজ হচ্ছে মানুষকে নিয়ে গঠিত। সমাজে বসবাস করতে হলে একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তোলার। সামাজিক সব কর্মকান্ডে পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয়। এ সমাজে বহু মানুষের বসবাস। আর সেই মানুষের মধ্যে কেউ বিত্তশালী। কেউ বা মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত। তাদের মধ্যে আবার কেউ আছে সুবিধাবঞ্চিত। যাদের জীবনযাত্রা খুবই বিপর্যস্ত। বর্তমানে আমাদের দেশে শীতকাল অতিবাহিত হচ্ছে। আর এই শীতকালে প্রত্যেক মানুষেরই কষ্ট হয় জীবনযাপন করতে। তবে এই শীতকালে বেশি কষ্ট হয় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের। তাদের অধিকাংশই হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। এই তীব্র শীতে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বেশি কষ্টকর। বিশেষ করে পথশিশুদের জন্য। আমাদের দেশে পথশিশুরা অবহেলিত, অধিকারহারা। তারা শহরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় জীবন-যাপন করে। বিশেষ করে বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, ফুটপাতসহ বিভিন্ন অলিগলিতে। আমাদের দেশে আরও একটি শ্রেণির লোক বেশি অবহেলিত। তারা হচ্ছে আমাদের দেশের বৃদ্ধাশ্রমের বয়স্ক মানুষ। তারা তাদের ন্যায্য অধিকারটুকু পূর্ণাঙ্গভাবে লাভ করতে পারে না। সঠিকভাবে পরিচর্যা পায় না। যে বয়সে থাকার কথা অতি যত্নশীলের মধ্যদিয়ে জীবন অতিবাহিত করা। কিন্তু তারা আজ অবহেলিত। এই শীতকালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ। আর এ অসুস্থ বা আক্রান্ত হওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে সঠিক পরিচর্যা না পাওয়া। একবারও ভেবে দেখেছি কি? শীতের এ তীব্রতায় এসব সুবিধা-বঞ্চিত মানুষ কীভাবে আছে? কেমন করে চলছে তাদের জীবনযাত্রা? প্রশ্ন থেকে যায়। আমাদের দেশে যারা বিত্তশালী লোক রয়েছে, তারা যদি মানবিকতার পরিচয় বহন করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাহলে এসব সুবিধা-বঞ্চিত মানুষ কষ্টের মধ্যদিয়ে জীবন-যাপন করতে হয় না। তারা হাসি-খুশিতে জীবন-যাপন করতে পারে। আর মানবিকতার পরিচয় বহন করতে বিত্তশীল হওয়া জরুরি নয়। বরং উদার মানসিকতার অধিকারী এবং চিন্তাশীল হওয়া জরুরি। তাই আমাদের উচিত উদার মানসিকতার অধিকারী হওয়া। যদিও আমাদের দেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন সংগঠনগুলো এসব সুবিধা-বঞ্চিত মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সবাই কি এ সহযোগিতার সুযোগ লাভ করতে পারে? প্রশ্ন থেকে যায়। তাই আমাদের দেশে যারা বিত্তশালী লোক রয়েছে। তাদের অবশ্যই উচিত সর্বদা এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো। শুধু যে বিত্তশালীদের দায়িত্ব এমনটি কিন্তু নয়। বরং এ সমাজে যে যার অবস্থান থেকে এসব সুবিধা-বঞ্চিত মানুষের প্রতি মানবিক ও আন্তরিক হওয়া উচিত। আমাদের উচিত তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা। আমরা চাই তারাও সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করুক। তাদের মুখেও হাসি ফুটুক। তাই আসুন মানবিকতার পরিচয় বহন করি, মানুষের পাশে থেকে মন জয় করি।