সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার দ্রম্নত কার্যকর উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ১২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। রমজান শুরুর আগে থেকেই খেজুর, চাল, ডাল, ছোলা, বেসন, চিনি ও পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও বেগুন, শসা, খেজুরের দাম আকাশছোঁয়া। বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কমতে শুরু করলেও আবার বেড়েছে রমজানের কারণে। দেশে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন। স্বাভাবিক সময়ে মাসে চাহিদা থাকে দেড় লাখ টন। আর রমজানে চাহিদা ৩ লাখ টন। রমজান ঘিরে শেষ তিন মাসে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৬০২ টন। এর বাইরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে আরও প্রচুর চিনি। তারপরও বাজারে বেড়ে চলেছে পণ্যটির দাম। এদিকে রমজান মাসকে সামনে রেখে সরকার চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। তবে বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই, উল্টো দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। এর ওপর নতুন করে একটি সুগার মিলের অগ্নিকান্ডকে পুঁজি করে বাজারে চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

গত এক সপ্তাহ আগেও যেখানে খোলা চিনি কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত, সেখানে রোজার আগ মুহূর্তে কেজিপ্রতি চিনির দাম উঠেছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা থেকে ১৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত কয়েকদিনে ডালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। একই হারে বেড়েছে বেসনের দামও। ভালো মানের ছোলার দামও নতুন করে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। সরকার ব্যবসায়ীদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচা ছোলা আমদানির সুযোগ দিলেও তার সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ক্রেতারা বাড়তি দামে কিনতে বাধ্য হলেও তাদের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।

আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর আগে তারা চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে।

বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। কেবল রমজানে নয়, সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। জনগণকে অসহায়ত্বে বা জিম্মিদশায় ফেলে দেয়া কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ নয়। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে ভালো কথা, সেই উন্নয়নের সুফল যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ জন্য দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে