শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্যপণ্যে ভেজাল কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

নতুনধারা
  ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
খাদ্যপণ্যে ভেজাল কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

খাদ্যপণ্যে ভেজাল- এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কিন্তু অপ্রিয় হলে সত্য যে, খাদ্যপণ্যে ভেজাল রোধ হচ্ছে না। এমনিতেই বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়; তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এতে নিম্নআয়ের মানুষের দিশাহারা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে আবার যদি খাদ্যপণ্যে ভেজাল রোধ না হয়- তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কাজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, সরকারি খাদ্য মাননিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারি না থাকার সুযোগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির হিড়িক পড়েছে। ফলে সারাদিন অভুক্ত থেকে ইফতারিতে তা খেয়ে রোজাদাররা ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আরও উৎকণ্ঠার বিষয় হলো, শুধু খেজুর নয়. দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের জন্য অতিমাত্রায় কেমিক্যাল মেশানো বিষাক্ত ফলমূল এবং নানা ধরনের ভেজাল খাদ্যপণ্যে জনস্বাস্থ্য এখন হুমকির মুখে এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

আমরা বলতে চাই, যখন ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা উলেস্নখ করে বিএসটিআই, ভোক্তা অধিদপ্তরসহ একাধিক সংস্থা মাঠে নামলেও বিচ্ছিন্ন এসব অভিযানের কোনো সুফল মিলছে না বলে জানা যাচ্ছে- তখন সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে না। অন্যদিকে সরকারি সংস্থাগুলো এ ব্যর্থতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বীকার করলেও লোকবল সংকটের বিষয়টি যখন বলেছে বলেই জানা যাচ্ছে, তখন এটাও আমলে নেওয়া দরকার যে- বাজার পর্যবেক্ষকদের ভাষ্য, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিতভাবে মাঠে নামলে এ লোকবল দিয়েই ভেজালবিরোধী অভিযান অনেকাংশেই সফল করা সম্ভব। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

আমরা বলতে চাই, খাদ্যে ভেজাল কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে ভেজাল রোধে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। উলেস্নখ্য, বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারের রমজানে ভেজালবিরোধী অভিযান অনেকটাই কম- তা খোদ ব্যবসায়ীরাই স্বীকার করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে এটাও আলোচনায় আসছে যে, ভেজালবিরোধী অভিযান চলমান থাকলে শত শত দোকানি মেয়াদোত্তীর্ণ পোকা ধরা খেজুর দোকানে থরে থরে সাজিয়ে বিক্রি করছেন কীভাবে? অসাধু ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা পোকা ধরা খেজুরের সঙ্গে স্বল্প পরিমাণ নতুন খেজুর মিশিয়ে দেদার বিক্রি করছে। কোথাও কোথাও খেজুর চকচকে করতে তেল মাখানো হচ্ছে। অথচ বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই- এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

আমরা বলতে চাই, যখন জানা যাচ্ছে- শুধু খেজুরই নয়- ভেজাল ও নিম্নমানের সব ধরনের খাদ্যপণ্য সবখানেই দেদার বিক্রি হচ্ছে। তখন ভেজাল রোধে কাজ করা সরকারি সংস্থাগুলোর সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এটাও সামনে এসেছে যে, অসাধু সিন্ডিকেট বছর পর বছর ধরে ভেজাল ও নিম্নমানের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য আমদানি, উৎপাদন এবং সরবরাহ করে যাচ্ছে। অথচ সারা বছর নিষ্ক্রিয় থেকে শুধু রমজান এলেই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ সরকারি সংস্থাগুলো লোক দেখানো নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। তাতে এসব অভিযানের সাফল্য বরাবরের মতো শূন্যের কোটাতেই আটকে থাকছে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আসলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথার্থ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করুন। এমন মত উঠে এসেছে যে, খাদ্যে ভেজাল সহনীয় পর্যায়ে আনতে হলে বছরব্যাপী অভিযান চালানো জরুরি। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে ভেজাল পণ্য বিক্রেতা, ফুটপাত কিংবা ছোট দোকানে অভিযান না চালিয়ে উৎপাদন পর্যায়ের কলকারখানা, আমদানিকারকদের গুদাম ও কোল্ড স্টোরেজে নিয়মিত খোঁজখবর রাখার তাগিদ দেন ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ভেজাল রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে