বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তৎপরতায় উদ্বিগ্নতা বাড়ছে

তাদের মদদদাতা গোলাবারুদ এবং প্রশিক্ষণ দাতা কারা, নিশ্চয় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জানার কথা। কীভাবে ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দিন দিন তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করছে। সেই বিষয়টি উৎকণ্ঠাও বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলকে নিরাপদ স্থিতিশীল এবং জনগণের শান্তিপূর্ণভাবে বাস করার জন্য সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার দায়িত্ব সরকারের। বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে দেশ ও জাতি চলতে বাধ্য।
মাহমুদুল হক আনসারী
  ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
পাহাড়ে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তৎপরতায় উদ্বিগ্নতা বাড়ছে

পাহাড় হোক অথবা সমতল হোক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবন, রাঙামাটি, কক্সবাজার পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের তৎপরতা জনমনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। গহিন জঙ্গলে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আস্তানা গড়ে তুলেছে। তাদের সশস্ত্র ট্রেনিং ফুটেজ ভাইরাল হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী সশস্ত্র কর্মকান্ড উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পাহাড়ে বর্তমান সরকার ব্যাপকভাবে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। রাঙামাটি থেকে বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে। পাহাড়ি জনগণের কর্মক্ষমতা বেড়েছে। কৃষি পণ্য বিপণন বাজারজাত উৎপাদন যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বিরাট সাফল্য পেয়েছে। এক সময় শান্তি বাহিনীর অপতৎপরতায় স্থানীয় জনগণ আতঙ্কে ছিল।

সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি ও পাহাড়ি জনগণের নাগরিক অধিকার প্রতিশ্রম্নতির বাস্তবায়নের ফলে ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হলেও আশঙ্কাজনকভাবে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সশস্ত্র বাহিনীর তৎপরতায় উদ্বেগ ও শঙ্কা বাড়ছে। কেএনএফ নামে জঙ্গি সংগঠন পুরো পাহাড়ি অঞ্চলকে অস্থির করে তুলছে। ব্যাংক ডাকাতি, জানমালের অপহরণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। তারা এত অস্ত্র-ট্রেনিং ও অর্থ পায় কোথা থেকে? কারা দিচ্ছে? প্রতিবেশী দেশের সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর ব্যবহারকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ তাদের হাতে বলে সংবাদ মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। সেই অঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি জনগণ সম্প্রীতির সঙ্গে বাস করছে। সরকারের যাবতীয় প্রশাসনিক দপ্তরগুলো সেখানে আছে। সেনবাহিনী, বর্ডার গার্ড, বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও নজরদারি রয়েছে। এত সব তৎপরতার মধ্যেও পাহাড়ি সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর উত্থান জনগণকে ভাবিয়ে তুলছে।

তাদের মদদদাতা গোলাবারুদ এবং প্রশিক্ষণ দাতা কারা, নিশ্চয় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জানার কথা। কীভাবে ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দিন দিন তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করছে। সেই বিষয়টি উৎকণ্ঠাও বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলকে নিরাপদ স্থিতিশীল এবং জনগণের শান্তিপূর্ণভাবে বাস করার জন্য সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার দায়িত্ব সরকারের। বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে দেশ ও জাতি চলতে বাধ্য।

সংবিধান পরিপন্থি রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা অমান্যকারী ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনতে হবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এতগুলো সেবা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন কি করে সেই অঞ্চলে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটি এখন ভাববার বিষয়। নানা সূত্রে থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক প্রায় ২ শতাধিক এনজিও কাজ করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ এনজিও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশবিরোধী চিন্তাচেতনা তৈরি করছে। ওই এলাকায় পাহাড়ি ভিন্ন-ভিন্ন ভাষার গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে বাচাইকৃত একটি শ্রেণিকে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে আলাদা করে ফেলার চিন্তাচেতনা ও কর্মসূচি দিয়ে এগিয়ে নিতে তৎপরতার সঙ্গে জড়িত। এই ধরনের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্য ও মানচিত্রবিরোধী কর্মকান্ড লম্বা সময় থেকে চলমান আছে।

পরিষ্কার করে বলতে গেলে বলতে হয় ইহুদি-খ্রিস্টান, মিশনারি তৎপরতা আশঙ্কাজনকভাবে ওই এলাকায় দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। যদি তাই সত্যি হয়, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ে এত উন্নয়ন, পাহাড়ি বিভিন্ন শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে নানা সুবিধায় সরকারি বড় বড় পদে নিয়োগ, চাকরি সার্বিকভাবে তাদের পুনর্বাসন এসব উপকারের কি ভবিষ্যৎ পার্বত্য কোটায় চাকরি-বাকরি, শিক্ষাদীক্ষা নিয়োগে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পাহাড়ি জনগণ রাষ্ট্রীয় সুবিধা বেশি ভোগ করছে। কিন্তু ফলাফল জাতীয়ভাবে শূন্যের কোটায় ধারণা করছে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। যদি পাহাড়ি সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণে না আনা হয় দেশের জন্য মারাত্মক দুর্গতি বয়ে আনবে।

পাহাড়কে শান্ত স্থিতিশীল জানমালের নিরাপত্তা স্থানীয় সমস্ত নাগরিকের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনোভাবেই সন্ত্রাসী, দেশবিরোধীগোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যে বা যারা তাদের মদতে আছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। জনগণ সন্ত্রাসী বাহিনীর যাবতীয় তৎপরতা ধ্বংস করে এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বাস্তবায়ন চায়।

মাহমুদুল হক আনসারী:সংগঠক, গবেষক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে