বাংলাদেশে সড়কপথের পাশাপাশি ট্রেন দুর্ঘটনার সংখ্যাটাও কম নয়। অনেকে সড়কপথের তুলনায় তুলনামূলক আরামদায়ক হওয়ার কারণে ট্রেনকে তাদের যাত্রা ভ্রমণের অংশ করে নেয়। তবে ট্রেন দুর্ঘটনা যাত্রীদের ভাবিয়ে তুলছে এই পথের যাত্রা কতটা তাদের জন্য নিরাপদ। সপ্তাহ বা মাস না যেতেই খবর শোনা যায়, বাংলাদেশের এই এলাকা বা ওই এলাকাতে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কেন এত দুর্ঘটনা হচ্ছে? আমাদের রয়েছে এই খাতে অনেক অব্যবস্থাপনা। বিশেষ করে ট্রেনের লাইনগুলোতে। অনেক স্থান আছে, যেখানে লাইন আঁকাবাঁকা বা ওপর নিচ হয়ে আছে। এর ওপর দিয়ে ট্রেন গেলেই বিশাল ঝাঁকুনি বলে দেয় আমাদের লাইনগুলো কতটা বিপজ্জনক। লাইনগুলোর সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। দরকার হলে লাইনগুলো যেখানে ভৌগোলিক অবস্থান তুলনামূলক দুর্বল, সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে লাইনগুলো ট্রেন যাওয়ার উপযোগী করতে হবে। অনেক স্থানের মাটি একটু বৃষ্টি হলেই সরে যায়। তাই সেসব স্থানে মাটির গঠন পরীক্ষা করে এমন কিছু দিয়ে লাইনের আশপাশের জায়গা তৈরি করতে হবে, যাতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আবার গ্রীষ্মে গরমে লাইন বেঁকে যাওয়ারও খবর পাওয়া যায়। তাই প্রয়োজনে লাইনগুলোর দুইপাশ, যেখানে গাছপালা নেই, সেখানে গাছপালা লাগিয়ে সামাজিক বনায়ন তৈরি করতে হবে। লাইনগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ বা যারা কর্মরত আছে, তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। রয়েছে গেটম্যান ও ট্রেনচালকদের অসচেতনতা। যেখানে ট্রেন লাইনের দুইপাশে সড়ক পথ আছে, সেখানে অনেক জায়গায় ট্রাফিক লাইট বা গেট নেই। ফলে অটো সিএনজি বাসের মতো যানবাহন লাইন পাড় হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। শুধু শহর বা গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ট্রাফিক লাইট বা গেট ম্যান দিলে হবে না, সব জায়গায় এই ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। কোনো জায়গায় গেটম্যান না থাকলে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। ট্রেনচালকদের সর্তক হয়ে চালাতে হবে। কারণ, আমাদের সব জায়গায় ট্রেন লাইন ট্রেন চালানোর উপযোগী নয়। তাই গতি কম বৃদ্ধিতে তাদের মনোযোগী হতে হবে। যারা রেললাইন পাড় হয় কিংবা ট্রেন যাওয়ার সময় হয়ে গেছে ট্রেন ধরতে পারছে না, কোনো কারণে তাই তাড়াতাড়ি না করে ট্রেন ছাড়ার পূর্বেই নিজে নিজের সিটে অবস্থান করুণ। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্তক থাকতে হবে। পরিশেষে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু আধুনিক হচ্ছে। আমাদের ট্রেনগুলোর মধ্যে যেগুলোর কোচ ফিটনেস ভালো নেই, সেগুলো বাদ দিতে হবে। ট্রেন ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।
মো. রিমেল
অর্থ সম্পাদক
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয় শাখা