সারা দেশে চলছে পলিথিন কারখানায় অভিযান। এ অভিযানে ৩৮ হাজার ১৭৮ কেজি পলিথিন জব্দ করার তথ্য দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর থেকে সারা দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সারা দেশে গত ৩ থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৬২টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এসব অভিযানে ৩৩৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আনুমানিক ৩৮ হাজার ১৭৮ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। শুধু ঢাকা মহানগরে ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী হাকিম কাজী তামজীদ আহমেদ, সুলতানা সালেহা সুমী এবং ফয়জুন্নেছা আক্তার এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এসব অভিযানে ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয় এবং প্রায় ৩ হাজার ৯৮০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। দূষণ রোধে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে।
এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, ২০০২ সালে আইন করে পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। পলিথিনের অবাধ ব্যবহার চলছিল। অন্তর্র্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোয় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অভিযানের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে পলিথিন ও পলিপ্রোপাইলিন শপিংব্যাগ উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এর বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। পলিথিন জব্দের পাশাপাশি জরিমানাও করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা পলিথিনকে পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান নিয়ামক ও পাইপলাইন হিসেবে অভিহিত করেছেন। নিষিদ্ধ হওয়ার ২০ বছর পরও উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন। অথচ অতিমাত্রায় পলিথিন ও পস্নাস্টিক ব্যবহারের কারণে মানব শরীরে বাসা বাঁধছে ক্যানসারসহ নানা রোগ।
এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কারখানার বাইরে তালা লাগিয়ে ভেতরে দেদার তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার পলথিনি নিষিদ্ধ করলেও বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলেননি। ফলে, নিরুপায় হয়ে তারা পলিথিনি ব্যবহার করছেন। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে এমন কোনো ব্যাগ বা হালকা বহনযোগ্য কিছু দিতে হবে। যার দাম কম ও সহজলভ্য হবে। তবেই পলিথিনের ব্যবহার কমবে। তাছাড়া পলিথিনের ব্যবহার কমবে না।
আমরা মনে করি, পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। একই সঙ্গে এর যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পলিথিন কারখানায় অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে নাগরিক সচেতনতা।