সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির খবর সামনে এসেছে- যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শ্রমিক অসন্তোষ বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, যেখানে উৎপাদন কমে যাওয়া, আর্থিক ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানায় গত বৃহস্পতিবারও শ্রমিকরা নানা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সরকার ঘোষিত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি ৯ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে তারা বার্ষিক মজুরি ১৫ শতাংশ ও নূ্যনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ২০ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, এ কথা স্মর্তব্য, শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধ থাকা মানেই উৎপাদন বন্ধসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও একাধিক কারখানার শ্রমিকের ভাষ্য, আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি বা ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি, নূ্যনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা, বার্ষিক অর্জিত ছুটির বকেয়া পুরো টাকা প্রতি বছর পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন। এসব দাবিতে কয়েকদিনের মতো বৃহস্পতিবারও আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যথাসময়ে কারখানায় যান। কিন্তু তারা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এছাড়া, বলা দরকার, এর আগে কয়েকটি কারখানায় কাজ শুরু হলেও কিছুক্ষণ পর কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা।
আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই এবং এই সংকট নিরসন জরুরি। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক বলেছেন, কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের কথা বলতে হবে। শ্রমিকদের থামিয়ে দেওয়া যাবে না। সমস্যা দেখতে হবে। সবাই ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা বলছেন, কিন্তু মূল সমস্যা খুঁজে বের করছেন না। আমরা মনে করি, যে পরিস্থিতি সৃষ্ট হয়েছে তা আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব এর সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, তৈরি পোশাক খাত দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম উৎস। ফলে, এই খাতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার। এর আগে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল, তাতে অন্তত ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল বলে দাবি করেছিল বিজিএমইএ। ফলে, এটা এড়ানো যাবে না যে, শ্রমিক অসন্তোষসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এই খাতের জন্য উদ্বেগের। এছাড়া, নানা সময়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অবরোধ, জ্বালাও পোড়াওসহ নানা ঘটনাও ঘটেছে- যা গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে, পোশাক খাতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা রোধ করতে হবে। এখন যখন ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা নানা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন, কারখানা বন্ধ রাখার ঘটনা ঘটেছে; তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, শ্রমিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে পোশাক খাতের ক্ষতি হতে থাকলে সেটি উৎকণ্ঠার। সঙ্গত কারণেই শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানায় গত বৃহস্পতিবারও শ্রমিকরা নানা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন। এটা যেমন এড়ানো যাবে না, তেমনিভাবে সরকার ঘোষিত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি ৯ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা তারা প্রত্যাখ্যান করে, বার্ষিক মজুরি ১৫ শতাংশ ও নূ্যনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন- সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সার্বিক অবস্থা আমলে নিতে হবে। এছাড়া, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কারখানা বন্ধ থাকছে এটা কাম্য নয়। ফলে, সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।