বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

কৃষকের মুখে হাসি

কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে
  ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কৃষকের মুখে হাসি

কৃষকের মুখে সোনালি হাসি ঝরছে। হেমন্তের শেষে মাঠজুড়ে সোনালি ধানের ঢেউ। ভোরের মিষ্টি রোদের আভায় আরও উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে। বন্যা ও খরার মতো দুর্যোগের মধ্যে সংশয়ের পরও আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ক্ষেত থেকে ধান কাটছেন কৃষক-কৃষানি। ধানে ভরে গেছে কৃষকের বাড়ির উঠান। ধান ঘরে তুলতে কাটা ও মাড়াইয়ে তারা এখন অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের বাড়িতে অগ্রহায়ণের শেষে এখন চলছে বাঙালির ঐতিহ্যের নবান্ন উৎসবও। একই সঙ্গে বাজারে ধানের দামও ভালো। তাই খুশি কৃষক। চাষের খরচ মিটিয়ে তারা ধারদেনাও শোধ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। এদিকে, আমন ধানের আশাতীত ফলনে খুশি কৃষি বিভাগও। শঙ্কা ছাপিয়ে আশানুরূপ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষিবিদরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় নাবি জাতের ধান এখনো পাকেনি। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শতভাগ পুনর্বাসন করা যায়নি। তবে, ফলন ভালো হয়েছে। আর খরাপ্রবণ এলাকা উত্তরাঞ্চল নিয়ে আশঙ্কা থাকায় শতর্ক ছিল কৃষি বিভাগ। শেষ পর্যন্ত কোনো সমস্যা না হওয়ায় সেখানে আমনের ফলন গত বছরের চেয়ে ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের ধান পাকতে আরো ২০-২৫ দিন লাগবে।

উলেস্নখ্য, এ বছর ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিল। তবে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ১ লাখ ৬২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে, অর্জিত আবাদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি। ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আর উৎপাদন ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৭৮ লাখ ৭৪ হাজার মেট্রিক টন।

আমন মৌসুমের শুরুতে দেশজুড়ে বৃষ্টির দেখা মিলেনি। কিন্তু পরে অতি বৃষ্টি এবং ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১২ জেলাসহ দেশের ২৩ জেলা দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়ে। ফলে, আমনের বীজতলা নষ্ট হয়। রোপা ও বোনা আমনের ক্ষতি হয় ব্যাপক। বন্যায় প্রায় ১৪ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে আড়াই লাখের মতো কৃষককে আনা হয় পুনর্বাসনের আওতায়। বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয় তাদের। সব ধরনের প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিবেশ কাটিয়ে দেশের কৃষকদের মুখে যে হাসি ফুটেছে এবং আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে- এটা একটা ইতিবাচক দিক। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নানা ধরনের সহযোগিতা প্রদান করাও জরুরি। এর অন্য কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে