রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ

প্রায় ৫ মাস হতে চলল এ পর্যন্ত অগ্রগতি খুবই সামান্য। ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথ ক্রমশ দুর্গম হয়ে উঠছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে নানা সমীকরণ ও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কালোমেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। যা সরকার ও রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে।
বোরহানউদ্দীন ইউসুফ
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আপডেট  : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৯
ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ
ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ

বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার সূচনা করতে সক্ষম হবেন- এটা বহুল প্রত্যাশিত। যেখানে শাসক চাইলেই স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারবে না। কোনো দল চাইলেই নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারবে না। পুলিশ, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে। বাজারে থাকবে না লোভীদের সিন্ডিকেট। গণপরিবহণে থাকবে না চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্য। এ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে সংস্কার প্রক্রিয়ার পর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠিত হবে। প্রায় ৫ মাস হতে চলল এ পর্যন্ত অগ্রগতি খুবই সামান্য। ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথ ক্রমশ দুর্গম হয়ে উঠছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে নানা সমীকরণ ও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কালোমেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। যা সরকার ও রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে।

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবা ও পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তার পদক্ষেপ হতাশাজনক। ট্রাইবু্যনাল গঠন করে বিচারের প্রক্রিয়া অগ্রসর হলেও তা খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে। মোটাদাগে রাজনীতি ও প্রশাসনের চিহ্নিত অপরাধী ও খুনিদের আইনের আওতায় আনা হয়নি, এমনকি ৫ আগস্টের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকদের বড় অংশ ইতোমধ্যে বের হয়ে গেছে। তাই সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে দেড় দশকে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় কোনো আঁচড় লাগেনি বলেই মনে হচ্ছে; অনেকটা বহাল তবিয়তে ফ্যাসিবাদের সব কাঠামো। পুলিশ, প্রশাসন, সামরিক, আধাসামরিক বাহিনীর নিরবচ্ছিন্ন নিয়ন্ত্রণ ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গভীর রাতে রাষ্ট্রের সবচেয়ে স্পর্শকাতর স্থাপনা সচিবালয়ে একই সময়ে একাধিক জায়গায় আগুন শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নয়- সরকারের অসহায়ত্ব প্রমাণ করে। বিভিন্ন সেক্টর থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রূপে নানান দাবি নিয়ে হাজির হয়ে বিব্রত করছে সরকারকে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ বিরোধী বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানে অনৈক্যের সূর জোরদার হচ্ছে। রাজপথে রক্তের দাগ শুকানোর আগেই খুনির সহযোগীরা মুচকি হাসছে, এমনকি চান্স পেলে বলেই বসে, 'আগেই তো ভালো ছিলাম!' আমাদের ঐক্য, দৃঢ়তা ও কঠোরতার অভাবে এমন দুঃসাহস জুলাই ছাত্র-গণঅভু্যত্থানের প্রতি অসম্মানের শামিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা এবং সংশ্লিষ্টদের গণসংযোগের মতো বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, 'যে কোনো রাজনৈতিক দল নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে, কিংস পার্টি গঠন করা বা তাদের প্রচারণা করতে গিয়ে সরকারি সুবিধা ব্যবহার করা নিয়ে আমাদের ঘোর আপত্তি রয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে।' তিনি আরো বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী নেতারা অনেকেই ভোটের মাঠে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের দোসর ও সুবিধাভোগীদের কাছে টানছে। যা খুবই আপত্তিজনক।' রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সমন্বয়কদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিএনপিকে ভাঙার জন্য সরকারের ভেতরে ক্ষীণ প্রচেষ্টা কাজ করছে কিনা, তা নিয়ে জনগণের ভেতরে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।'

ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হলো ২৭-২৮ ডিসেম্বর। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সরকারের প্রতিনিধি ও ছাত্র-গণঅভু্যত্থানের নয়া বিপস্নবীরা অনেকেই অংশ নেয়। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রধান, অর্থনৈতিক অনিয়ম ও দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধানসহ বিশিষ্টজনরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ মুশতাক হুসাইন খান বলেন, 'সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে ক্ষতি হবে দেশের। বাংলাদেশের আসল সমস্যা ছিল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়া। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কেবল আইন পরিবর্তন করেনি। নিজেদের আইনও নিজেরা ভাঙার শক্তি অর্জন করেছিল, এটাই ছিল সমস্যা। তাই আইন ঠিক করতে হবে, আবার ক্ষমতার কাঠামোও ঠিক করতে হবে। সংস্কারের মাধ্যমে শুধু আইনকানুন পরিবর্তন করলে হবে না।' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে একটি গোপন ক্ষমতা কাঠামো গড়ে উঠেছে। এ গোপন ক্ষমতার বিন্যাস ভাঙতে হবে। কারণ দলের পরিবর্তন হলেও গোপন শক্তিটি নতুন দলের সঙ্গে ভিড়ে যাবে। এ কাজটা এখনই করতে হবে। তা রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে।' সত্যিকার অর্থে একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ব্যতীত বর্তমান অবস্থায় স্বাভাবিক রাজনৈতিক যাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে। অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'সংস্কার খুব বড় স্বপ্ন, ঐক্য তার জন্য দরকার, নির্বাচনেও যেতে হবে। কিন্তু তার আগে মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে। সংস্কারমুখী মানুষকে আইনশৃঙ্খলা না দিয়ে, তার খাওয়ার ব্যবস্থা না করে, চাকরির নিশ্চয়তা না দিয়ে বিপথে নিয়ে যাবেন না। সর্বোত্তম পেতে গিয়ে আমরা যেন উত্তমকে হারিয়ে না ফেলি। আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে চাই, কিন্তু এ মুহূর্তের সমস্যাগুলো মনোযোগে না নিলে ওই জায়গাটায় পৌঁছানো যাবে না।' সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, 'দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়ে একটা জাতীয় ঐক্য দেখা গেছে। এখন বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা কী হবে সেই ঐক্য দরকার। গত ১৫-১৬ বছরে ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত ছিল। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও জনগণকে ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কারের পথে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ আপনি যত ভালো সংবিধান তৈরি করেন না কেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে সেই সংবিধান আবারও ভাঙা হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে জোর দিতে হবে। জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবিক মর্যাদা অর্জন কখনোই সম্ভব নয়।'

গব মহল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির ইস্পাৎ কঠিন ঐক্যের কথা বলা হলেও প্রতিনিয়ত দূরত্ব বাড়ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'বাংলাদেশ একটা অত্যন্ত জটিল রাজনৈতিক সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্য আমাদের, এখন কিছু কিছু বক্তব্য আসছে যে, বিএনপি সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। এ কথাটা সঠিক নয়। আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য ন্যূনতম যে সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারটুকু করে নির্বাচনে যেতে চাই।' বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে পাবলিক ডায়ালগ আয়োজন করার পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, 'সংস্কার, সংলাপ, জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে আমি বলব, সরকারের পক্ষ থেকে যে রিফর্ম কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে; সেই কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। সহজ পথ হলো- আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সব দল দিচ্ছে। সংস্কার বিশাল ব্যাপার। রাষ্ট্রের সব অর্গান পলিটিসাইজ হয়েছে এবং করাপ্ট হয়েছে। অন্তবর্তী সরকারের পক্ষে সবকিছু সংস্কার করা সম্ভব নয়। ইট উইল টেক টাইম।' পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মন্তব্য করেন, 'এবার সংস্কার প্রশ্নে পিছপা হলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। সংস্কারের বিষয়ে একমত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ কাউকে প্রতিপক্ষ ভাবা ঠিক নয়।'

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সমর্থকদের প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য বিব্রতকর। পরস্পর অভিযোগের ধরন যেমন, বিএনপি যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে পাগল হয়ে গেছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। অন্যদিকে, সারাজীবন ফ্যাসিবাদের সহযোগী থেকে হঠাৎ বিপস্নবী বনে যাওয়া এবং যেহেতু ৫/৬ শতাংশের বেশি ভোট নেই; তাই নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করে অরাজনৈতিক শক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা; ইত্যাদি। বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দখলদারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠায় হাইকমান্ড থেকে কোনো ছাড় না দেয়ার ঘোষণা এসেছে। ছাত্রদল বা বিএনপিকে পাশকাটিয়ে শিবিরের সহযোগে সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মসূচি পরস্পরকে মুখোমুখি করেছে। এদিকে ছাত্রদলকে ছুড়ে ফেলে দেয়া। অন্যদিকে, বিপস্নবীদের নয়া সমীকরণ ৫ আগস্টের ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ছাত্রদল সভাপতির বয়স নিয়ে কটুক্তি করায় প্রবাসী সাংবাদিক এক্টিভিস্ট শাহেদ আলম ফেসবুক পোস্টে লিখেন, '২০১৭ সালে আমরা যখন গণতন্ত্রের জন্য লড়ছিলাম, তখন মাহফুজরা 'জননেত্রী'কে স্বাগত জানাচ্ছিলেন লক্ষ্ণীপুরে। হাসনাত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কলাম লিখছিল ২০২০ এ, সার্জিস আমার বঙ্গবন্ধু শিরোনামে বক্তৃতা দিচ্ছিল, ফরহাদ সাদিকরা ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল, মীর্জা গালিব চুপি চুপি লীগ করে পশ্চিমে পাড়ি জমিয়েছিল, রাকিবরা মাটি কামড়ে পড়ে ছিল।'

জুলাই ছাত্র-গণঅভু্যত্থানের ফলে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তল্পিতল্পাসহ পালিয়ে যায়। দেশ-বিদেশে পালিয়ে কিংবা আত্মগোপনে যায় পুরো মন্ত্রিসভা ও গোটা পার্লামেন্ট! এটা বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও নজিরবিহীন। গুটি কতক নেতা-পাতি আটক হলেও সভানেত্রীর 'শেখ হাসিনা পালায় না' বা সাধারণ সম্পাদকের 'পালাবো না! প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় উঠবো' কথাগুলো মিথ্যা প্রমাণ করে তারা দলে দলে সত্যিই পালিয়ে যায়। যদিও পালানোর আগে জাতিকে চরম মাশুল দিতে হয়েছিল। হাজার হাজার শিশু-কিশোর, ছাত্র-যুবা নির্মমভাবে হতাহত হয়।

এ ত্যাগের বিনিময়ে মুক্ত স্বদেশে এখন আমরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছি। যা ছিল প্রায় অসম্ভব। অঘোষিতভাবে সাংবিধানিক অধিকার স্থগিত ছিল। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষায় 'বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে।' ইতোমধ্যে বিএনপি ঘোষিত 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা' এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে সারাদেশে এ বিষয়ে সেমিনার, কর্মশালা ও জনসংযোগ চলছে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে। পাশাপাশি সারাদেশে জামায়াত নির্বিঘ্নে জনসংযোগ ও প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যা চোখে পড়ার মতো। মুক্ত পরিবেশে বিএনপি এবং জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর দলীয় কর্মসূচির পরিবেশ কিছুদিন আগেও ছিল অকল্পনীয়।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদীগোষ্ঠী আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। এর মধ্যে সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে ক্রমশ মুখোমুখি অবস্থানে বিএনপি এবং জামায়াত। যা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের প্রতি বিরাট হুমকি। বলা বাহুল্য, এ অবস্থানকে কেন্দ্র করে পরস্পর বিরোধী মিথ্যা প্রপাগান্ডা, তথা কুৎসা রটনা ন্যক্কারজনক দিকে ধাবিত হচ্ছে। অথচ সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে উভয়ের মধ্যে মোটাদাগে বিরোধ নেই।

বোরহানউদ্দীন ইউসুফ : প্রধান সমন্বয়কারী, কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল এজেন্ডা (সিএনএ) ও ফেমা'র সাবেক দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষক

নড়ৎযঁহফযধশধ@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে