রোববার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২
স্মরণীয়-বরণীয়

অন্নপূর্ণা গোস্বামী

  ০৮ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
অন্নপূর্ণা গোস্বামী
অন্নপূর্ণা গোস্বামী

অন্নপূর্ণা গোস্বামী ছিলেন বিংশ শতকের প্রথমার্ধের প্রগতিশীল এবং সামাজিক প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ উপন্যাসিক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লীলা পুরস্কারে সম্মানিত বাঙালি সাহিত্যিক। পেশাদার না হলেও প্রথম বাঙালি মহিলা ফটোগ্রাফারদের অন্যতম ছিলেন তিনি। অন্নপূর্ণা গোস্বামীর জন্ম ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ। পিতা নীতীশচন্দ্র লাহিড়ী ছিলেন আইন ব্যবসায়ী এবং কলাম্বিয়া পিকচার্সের জেনারেল ম্যানেজার। পড়াশোনা প্রথমে কলকাতার সেন্ট জন'স ডায়সেশন গার্লস স্কুল ও ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনে। কলেজের পাঠ শেষে বিবাহ করেন চিকিৎসক অবনীমোহন গোস্বামীকে। তিনি পূর্ব রেলের সহকারী শল্যচিকিৎসক ছিলেন। অন্নপূর্ণা গোস্বামী প্রথমে 'অনামিকা' ছদ্মনামে লেখা শুরু করেন। তৎকালীন প্রগতিশীল সমাজে সাধারণ মানুষের পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিশেষভাবে স্থান করে নিয়েছে তার রচিত উপন্যাস ও ছোটগল্পে। মানুষের সাহিত্য বা গণ-সাহিত্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে তার রচনার জন্য 'সাহিত্যকুশলা', 'ভারতী', 'সাহিত্য সরস্বতী' উপাধিপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে তার 'নয়া ইতিহাস' গ্রন্থটি ভারত সরকার কর্তৃক গণ-সাহিত্য হিসেবে নির্বাচিত হয়। অন্নপূর্ণা গোস্বামী ভালো ফটোগ্রাফারও ছিলেন। তিনি অবসর সময়ে ফটোগ্রাফিতেই সময় কাটাতেন। পেশাদার ফটোগ্রাফার না হলেও, তার ছবিতে ফুটে উঠেছে কলকাতার আসল ছবি। পারিবারিক ছবি ছাড়াও 'শহুরে দরিদ্র' ও দেশভাগের পর 'কলকাতায় আসা শরণার্থী' এবং রেললাইনের ধারের কুঁড়ে ঘরে থাকা মানুষের, বস্তিবাসীরাই ছিল তার ফটোগ্রাফির বিষয়াদি। যথেষ্ট অর্থবহ ছিল সে ছবিগুলো। সূর্যোদয়, সূর্যাস্তসহ নৈসর্গিক চিত্র, বাঁশের কুটিরে বিশাল আয়নায় শরণার্থীর চুল আঁচড়ানো, দুর্ভিক্ষের সময় পড়ে থাকা বস্তাবন্দি খাদ্যশস্য নিপুণতায় ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। অন্নপূর্ণা গোস্বামীর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্যগ্রন্থগুলো হলো-রেললাইনের ধারে, ভ্রষ্টা, বাঁধনহারা, মৃগতৃষ্ণিকা, সাঙ্গোপনে, এবার অবগুণ্ঠন খোল, তপস্বিনী, স্বাগতম, এক ফালি বারান্দা, তুমি শুধু ছবি প্রভৃতি। ১৯৫৭ সালে তিনি মৃতু্যবরণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে