রোববার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঐতিহ্যের রাজশাহী

  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
ঐতিহ্যের রাজশাহী
ঐতিহ্যের রাজশাহী

রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী, উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় শহর। রাজশাহী পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। পঞ্চদশ শতকে ভাতুরিয়া দিনাজপুরের জমিদার রাজা কংস এ অঞ্চলের অধিপতি ছিলেন। তিনি রাজা শাহ নামে পরিচিত ছিলেন। মনে করা হয় 'রাজা' আর 'শাহ' মিলে রাজশাহী নামকরণ হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের রাজশাহী ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী হিসেবে স্বীকৃত।

রাজশাহী রেশমি বস্ত্র, আম, লিচু এবং মিষ্টান্নসামগ্রীর জন্য প্রসিদ্ধ। রেশমি বস্ত্রের কারণে রাজশাহীকে রেশম নগরী নামেও ডাকা হয়। এ শহরে উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের অনেকগুলোর খ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নামকরা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য রাজশাহী শহর শিক্ষানগরী হিসেবেও পরিচিত। রাজশাহী শহরে এবং এর আশপাশে বেশকিছু বিখ্যাত ঐতিহাসিক মসজিদ-মন্দির উপাসনালয় তথা ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। সব মিলে রাজশাহী এক ইতিহাসখ্যাত নগরী।

1

এই শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একদা প্রমত্তা পদ্মার প্রাণলীলা। শহরের দক্ষিণে পদ্মার বিশালতা হাতছানি দেয়। পদ্মা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী।

রাজশাহী রেশম সুতা ও রেশম বস্ত্র তৈরির জন্য বিখ্যাত। ১৯৭৭ সালে রাজশাহীতে রেশম বোর্ড স্থাপিত হয়। অন্যান্য কুটিরশিল্পের মধ্যে কাঠের কাজ, সেলাই, তাঁত, বাঁশ, বেত উলেস্নখযোগ্য।

রাজশাহী শিক্ষানগরী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এখানে রয়েছে যেমন- বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী জেলায় ৩৬৭টি মাদ্রাসা, ১৯৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১০টি কলেজ রয়েছে। দেশের একমাত্র পুলিশ একাডেমি ও পোস্টাল একাডেমি এ জেলাতেই অবস্থিত।

রাজশাহীর ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক রাজশাহী বোয়ালিয়া ক্লাব। ইংরেজ শাসক ও বিদেশি বেনিয়া শ্রেণির আনন্দ-বিনোদনের কেন্দ্র ছিল এই ক্লাব। সোয়া ১০০ বছর বয়সি এই সংগঠনটি কালের বিবর্তনে বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কালের উত্থান-পতন, নিষ্ঠুরতা-কলঙ্ক সবকিছুর স্মৃতিবিজড়িত এই ক্লাব।

শাহ মখদুম রুপোশ ত্রয়োদশ শতকের শেষার্ধে এবং চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুতে বাংলাদেশ তথা রাজশাহী অঞ্চলে ইসলামের সুমহান বাণী প্রচার করেছিলেন। শাহ মখদুম রুপোশ সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। মৃতু্যর পর তাকে তার বলে দেওয়া স্থানে সমাহিত করা হয়। তার কবর রাজশাহী শহরে অবস্থিত। দেশ-বিদেশ থেকে শাহ মখদুমের হাজার হাজার ভক্ত অনুসারীরা তার মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে আসেন।

এছাড়া ঢোপকল রাজশাহী শহরের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্য। এই ঢোপকলের সঙ্গে রাজশাহীর সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িত। রাজশাহীবাসীর জন্য সার্বক্ষণিক বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে মহারানী হেমন্ত কুমারীর উদ্যোগে নির্মিত হয় ঢোপকল। যার অন্যতম নিদর্শন রাজশাহী শহরেই অবস্থিত। কিন্তু বর্তমানে এই ঢোপকলগুলো বিলুপ্ত প্রায়। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি বিকাশে রাজশাহী উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।

মাশিহা কায়েনাথ মিদোরী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল

শ্রেণি-৮ম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে