রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

সুধীরবরণ মাঝি, শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, হাইমচর, চাঁদপুর
  ২৩ মে ২০২৩, ০০:০০
অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা
অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

তৃতীয় অধ্যায়

৫.

1

ক) চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেন কে?

খ) সংস্কৃতির আত্তীকরণ কেন ঘটে?

গ) উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' শিল্পটি ধরন ব্যাখ্যা করো।

ঘ) 'বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে 'খ' শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম-বিশ্লেষণ' করো।

উত্তর :

ক) ভাষাবিদ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেন।

খ) অন্য সংস্কৃতির ধারা নিজ সংস্কৃতিতে আয়ত্ত করার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ ঘটে। সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অন্যের সংস্কৃতি আয়ত্ত করে। যখন মানুষ কোনো নতুন সংস্কৃতি বা সাংস্কৃতিক পরিবেশে বসবাস করতে আসে তখন সেখানকার মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, চিন্তা, চেতনা, মূল্যবোধ এক কথায় সমগ্র জীবনধারার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে চায়। আর এভাবেই সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ হয়ে যায়।

গ) বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' শিল্পটি হচ্ছে দৃশ্যশিল্প। প্রাচীনকালে বাংলা এলাকায় ছাঁচ অনুযায়ী মাটির তৈরি ইট দিয়ে মন্দির বানানো হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে শিল্পমূল্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাটির ফলক তৈরি করে তাতে ছবি উৎকীর্ণ করে পুড়িয়ে স্থায়ী রূপ দেওয়া। এগুলোকে টেরাকোটা বা পোড়ামাটির শিল্প বলা হয়। এ ছাড়া কালো রঙের কষ্টিপাথর আর নানা রকম মাটি দিয়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবদেবীর মূর্তি বানানোর ঐতিহ্যও বেশ পুরনো। তবে পাল যুগে তালপাতার পুঁথিতে দেশীয় রং দিয়ে যেসব ছবি আঁকা হয়েছে তার প্রশংসা আধুনিক শিল্প রসিকদের কাছ থেকেও পাওয়া যায়। অন্যদিকে বাংলার নকশিকাঁথার ঐতিহ্যও অনেক পুরনো। মহিলারা ঘরে ঘরে কাঁথা সেলাই করে তাতে আশ্চার্য নিপুণতার গল্পকাহিনী ও ছবি ফুটিয়ে তুলতো। উদ্দীপকে 'ক' শিল্পের উপাদান হিসেবে পোড়ামাটির শিল্প, তালপাতার শিল্প, নকশিকাঁথা, কষ্টিপাথরের নাম উলেস্নখ করা হয়েছে। যেহেতু এগুলো দৃশ্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী 'ক' শিল্পটিও দৃশ্যশিল্প

ঘ) বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে 'খ' শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্দীপকে 'খ' শিল্পের উপাদান হিসেবে চর্যাগীতি, কীর্তনগান, মঙ্গল কাব্য, পুঁথিসাহিত্য ও গদ্যসাহিত্যের কথা বলা হয়েছে। যেহেতু এগুলো সাহিত্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু 'খ' শিল্পও সাহিত্য শিল্প। আর বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে সাহিত্য শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ যেভাবে জীবনযাপন করে, যেসব জিনিস ব্যবহার করে, যেসব আচার-অনুষ্ঠান পালন করে, যা কিছু সৃষ্টি করে সব নিয়েই তার সংস্কৃতি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির অংশ। বাঙালির প্রথম সাহিত্যকর্ম হচ্ছে চর্যাপদ। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সাধকরা এই চর্যাগীতিগুলো লিখেছেন। এগুলো বাংলা সাহিত্যের আদি নমুনা। অন্যদিকে সুলতানি আমলে শ্রীচৈতন্যের বৈষ্ণব ভাবধারার প্রভাবে বাংলায় কীর্তন গান রচনা শুরু হয় যা বৈষ্ণব পদাবলি নামে পরিচিত। অনেক মুসলিম কবিও এই পদাবলি রচনা করেন। যা সেই সময়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এক সময় দেবদেবীকে নিয়েও নানা কাব্যকাহিনী রচিত হয়েছে। এগুলো মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত। এ ছাড়া এক সময় মুসলিম সমাজেও পুঁথি সাহিত্যের ব্যাপক কদর ছিল। পারস্য থেকে পাওয়া নানা কল্পকাহিনী এবং রোমান্টিক আখ্যান নিয়ে এগুলো রচিত হতো। পরবর্তীকালে উনিশ শতকে আমাদের দেশে বাংলা গদ্যের সূচনা হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভিত রচনা করেন। সার্বিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সাহিত্য শিল্প বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ধীরে ধীরে তা বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, কাজী নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সাহিত্যিকের লেখনীতে বিকাশ লাভ করে। তাই বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে সাহিত্য শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।

৬। ক) টেরাকোটা কী?

খ) পাল যুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো এখনো ঝকঝকে রয়েছে কেন?

গ) উদ্দীপকে বাংলার কোনো শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? বর্ণনা করো।

ঘ) উদ্দীপকের শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান মূল্যায়ন করো।

উত্তর :

ক) টেরাকোটা হলো পোড়ামাটির শিল্প। মাটির ফলক তৈরি করে তাতে ছবি খোদাই করে পুড়িয়ে স্থায়ী রূপ দেওয়া হলে সেটিকে টেরাকোটা বলা হয়।

খ) পালযুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো দেশীয় রঙে আঁকা। এ ছাড়া এগুলো আবিষ্কৃত হওয়ার পর প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এ কারণে পাল যুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো এখনো ঝকঝকে রয়েছে।

গ) উদ্দীপকে বাংলার দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। বাংলার দৃশ্যশিল্পের মধ্যে নকশিকাঁথা অন্যতম। গ্রামীণ মহিলারা ঘরে ঘরে কাঁথা সেলাই করে তাতে আশ্চার্য নিপুণতার গল্পকাহিনী ও ছবি ফুটিয়ে তুলত। এ ছাড়া কাঠের কাজ বা কারুশিল্প, শঙ্খের কাজ, বাঁশ, বেত ও শোলার কাজেও বাংলার মানুষ দক্ষতা দেখিয়েছে এবং তাদের সৃজনশীল মনের প্রকাশ ঘটিয়েছে। আর এগুলোই দৃশ্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকেও নকশিকাঁথা, বেতের তৈরি চেয়ার ও শীতল পাটি এবং বাঁশের ঝুড়ি ও কুলার ছবি রয়েছে। সুলতানি আমল থেকে বাংলায় স্থাপত্যশিল্পের, দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। অনেক গম্বুজ, খিলান, নবাব কাটারা, লালবাগের কুঠি, অনেক দপ্তর ও বাড়িঘর তৈরি হয়েছে এই রীতিতে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বাংলার দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।

ঘ) উদ্দীপকের শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। উদ্দীপকে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র এবং নকশিকাঁথা দেখা যাচ্ছে। এই শিল্পকর্মগুলো মূলত নারীদের হাতে তৈরি হয় এবং এই শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার গ্রামীণ নারীরা তাদের অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করে তাতে অনবদ্য শৈল্পিক রূপ দান করেছে। আর এগুলোকে বলা হয় নকশিকাঁথা। এখনো গ্রামীণ দরিদ্র নারীরা এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া বাঁশ ও বেত দিয়ে বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র তৈরি করে তাদের দক্ষতা ও সৃজনশীল মনের প্রকাশ ঘটাচ্ছে এবং এগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় বাংলার দৃশ্য শিল্পের অন্তর্ভুক্ত শিল্প কর্ম টিকিয়ে রাখতে বাংলার নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

ক) চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেন কে?

খ) সংস্কৃতির আত্তীকরণ কেন ঘটে?

গ) উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' শিল্পটি ধরন ব্যাখ্যা করো।

ঘ) 'বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে 'খ' শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম-বিশ্লেষণ' করো।

উত্তর :

ক) ভাষাবিদ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেন।

খ) অন্য সংস্কৃতির ধারা নিজ সংস্কৃতিতে আয়ত্ত করার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ ঘটে। সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অন্যের সংস্কৃতি আয়ত্ত করে। যখন মানুষ কোনো নতুন সংস্কৃতি বা সাংস্কৃতিক পরিবেশে বসবাস করতে আসে তখন সেখানকার মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, চিন্তা, চেতনা, মূল্যবোধ এক কথায় সমগ্র জীবনধারার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে চায়। আর এভাবেই সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ হয়ে যায়।

গ) বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উদ্দীপকে বর্ণিত 'ক' শিল্পটি হচ্ছে দৃশ্যশিল্প। প্রাচীনকালে বাংলা এলাকায় ছাঁচ অনুযায়ী মাটির তৈরি ইট দিয়ে মন্দির বানানো হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে শিল্পমূল্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাটির ফলক তৈরি করে তাতে ছবি উৎকীর্ণ করে পুড়িয়ে স্থায়ী রূপ দেওয়া। এগুলোকে টেরাকোটা বা পোড়ামাটির শিল্প বলা হয়। এ ছাড়া কালো রঙের কষ্টিপাথর আর নানা রকম মাটি দিয়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবদেবীর মূর্তি বানানোর ঐতিহ্যও বেশ পুরনো। তবে পাল যুগে তালপাতার পুঁথিতে দেশীয় রং দিয়ে যেসব ছবি আঁকা হয়েছে তার প্রশংসা আধুনিক শিল্প রসিকদের কাছ থেকেও পাওয়া যায়। অন্যদিকে বাংলার নকশিকাঁথার ঐতিহ্যও অনেক পুরনো। মহিলারা ঘরে ঘরে কাঁথা সেলাই করে তাতে আশ্চার্য নিপুণতার গল্পকাহিনী ও ছবি ফুটিয়ে তুলতো। উদ্দীপকে 'ক' শিল্পের উপাদান হিসেবে পোড়ামাটির শিল্প, তালপাতার শিল্প, নকশিকাঁথা, কষ্টিপাথরের নাম উলেস্নখ করা হয়েছে। যেহেতু এগুলো দৃশ্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী 'ক' শিল্পটিও দৃশ্যশিল্প

ঘ) বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে 'খ' শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্দীপকে 'খ' শিল্পের উপাদান হিসেবে চর্যাগীতি, কীর্তনগান, মঙ্গল কাব্য, পুঁথিসাহিত্য ও গদ্যসাহিত্যের কথা বলা হয়েছে। যেহেতু এগুলো সাহিত্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু 'খ' শিল্পও সাহিত্য শিল্প। আর বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে সাহিত্য শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ যেভাবে জীবনযাপন করে, যেসব জিনিস ব্যবহার করে, যেসব আচার-অনুষ্ঠান পালন করে, যা কিছু সৃষ্টি করে সব নিয়েই তার সংস্কৃতি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির অংশ। বাঙালির প্রথম সাহিত্যকর্ম হচ্ছে চর্যাপদ। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সাধকরা এই চর্যাগীতিগুলো লিখেছেন। এগুলো বাংলা সাহিত্যের আদি নমুনা। অন্যদিকে সুলতানি আমলে শ্রীচৈতন্যের বৈষ্ণব ভাবধারার প্রভাবে বাংলায় কীর্তন গান রচনা শুরু হয় যা বৈষ্ণব পদাবলি নামে পরিচিত। অনেক মুসলিম কবিও এই পদাবলি রচনা করেন। যা সেই সময়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এক সময় দেবদেবীকে নিয়েও নানা কাব্যকাহিনী রচিত হয়েছে। এগুলো মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত। এ ছাড়া এক সময় মুসলিম সমাজেও পুঁথি সাহিত্যের ব্যাপক কদর ছিল। পারস্য থেকে পাওয়া নানা কল্পকাহিনী এবং রোমান্টিক আখ্যান নিয়ে এগুলো রচিত হতো। পরবর্তীকালে উনিশ শতকে আমাদের দেশে বাংলা গদ্যের সূচনা হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভিত রচনা করেন। সার্বিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সাহিত্য শিল্প বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ধীরে ধীরে তা বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, কাজী নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সাহিত্যিকের লেখনীতে বিকাশ লাভ করে। তাই বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে সাহিত্য শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।

৬। ক) টেরাকোটা কী?

খ) পাল যুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো এখনো ঝকঝকে রয়েছে কেন?

গ) উদ্দীপকে বাংলার কোনো শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? বর্ণনা করো।

ঘ) উদ্দীপকের শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান মূল্যায়ন করো।

উত্তর :

ক) টেরাকোটা হলো পোড়ামাটির শিল্প। মাটির ফলক তৈরি করে তাতে ছবি খোদাই করে পুড়িয়ে স্থায়ী রূপ দেওয়া হলে সেটিকে টেরাকোটা বলা হয়।

খ) পালযুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো দেশীয় রঙে আঁকা। এ ছাড়া এগুলো আবিষ্কৃত হওয়ার পর প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এ কারণে পাল যুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো এখনো ঝকঝকে রয়েছে।

গ) উদ্দীপকে বাংলার দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। বাংলার দৃশ্যশিল্পের মধ্যে নকশিকাঁথা অন্যতম। গ্রামীণ মহিলারা ঘরে ঘরে কাঁথা সেলাই করে তাতে আশ্চার্য নিপুণতার গল্পকাহিনী ও ছবি ফুটিয়ে তুলত। এ ছাড়া কাঠের কাজ বা কারুশিল্প, শঙ্খের কাজ, বাঁশ, বেত ও শোলার কাজেও বাংলার মানুষ দক্ষতা দেখিয়েছে এবং তাদের সৃজনশীল মনের প্রকাশ ঘটিয়েছে। আর এগুলোই দৃশ্যশিল্পের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকেও নকশিকাঁথা, বেতের তৈরি চেয়ার ও শীতল পাটি এবং বাঁশের ঝুড়ি ও কুলার ছবি রয়েছে। সুলতানি আমল থেকে বাংলায় স্থাপত্যশিল্পের, দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। অনেক গম্বুজ, খিলান, নবাব কাটারা, লালবাগের কুঠি, অনেক দপ্তর ও বাড়িঘর তৈরি হয়েছে এই রীতিতে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বাংলার দৃশ্যশিল্পের তথা বস্তুগত শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।

ঘ) উদ্দীপকের শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। উদ্দীপকে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র এবং নকশিকাঁথা দেখা যাচ্ছে। এই শিল্পকর্মগুলো মূলত নারীদের হাতে তৈরি হয় এবং এই শিল্পকর্ম এখনো টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার গ্রামীণ নারীরা তাদের অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করে তাতে অনবদ্য শৈল্পিক রূপ দান করেছে। আর এগুলোকে বলা হয় নকশিকাঁথা। এখনো গ্রামীণ দরিদ্র নারীরা এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া বাঁশ ও বেত দিয়ে বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র তৈরি করে তাদের দক্ষতা ও সৃজনশীল মনের প্রকাশ ঘটাচ্ছে এবং এগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় বাংলার দৃশ্য শিল্পের অন্তর্ভুক্ত শিল্প কর্ম টিকিয়ে রাখতে বাংলার নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

\হপরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে