রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

তোমাদের শুরুটা হোক বিশ্বজয়ের

সুধীর বরণ মাঝি শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় হাইমচর, চাঁদপুর।
  ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
তোমাদের শুরুটা হোক বিশ্বজয়ের
তোমাদের শুরুটা হোক বিশ্বজয়ের

প্রিয় শিক্ষার্থীরা

নতুন বছর, নতুন বই, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম, নতুন করে শিক্ষা জীবনের আরেকটি বছর শুরু করার জন্য মননশীল চিন্তায় নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে নিজেকে নিশ্চয়ই সম্পৃক্ত রেখেছ। আমারও তাই মনে হয়। নতুন বছরে নতুন ক্লাসের পড়াশোনা সুন্দরভাবে শুরু করতে বছরের প্রথম থেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পড়াশোনা করা উচিত। আর এর জন্য প্রয়োজন নতুন রুটিন। ছাত্রজীবনে রুটিন করে পড়াশোনার বিকল্প নেই। শৃঙ্খলা ও সু-অভ্যাসই সব সফলতার নেপথ্য নায়ক। পড়াশোনায় ভালো করার জন্য দরকার কিছু সু-অভ্যাস গড়ে তোলা। আর সু-অভ্যাস বছরের প্রথম থেকে মেনে চলতে পারলে এবং রুটিন মেনে পড়াশোনা করলে বছর শেষে পরীক্ষার সময় দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয় না। দৈনন্দিন জীবনের সব কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখতে হবে এই রুটিনে। শুধু পড়াশোনা বা স্কুলের জন্য নয়, বরং ঘুম থেকে ওঠা, শরীরচর্চা, খাওয়া, খেলাধুলা এবং ঘুমানোর আগে সারা দিনের কাজ পর্যালোচনার জন্যও সময় রাখতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের পড়া তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখতে হবে। যে বিষয়ের পড়া তৈরি করতে সময় বেশি লাগে, সে বিষয়ের জন্য সময় বেশি রাখো।

পড়া-লেখা দুটোই সমানভাবে চালিয়ে যেতে হবে। শরীর ও মন ভালো রাখার জন্য নিয়মিত খেলাধুলাও করতে হবে।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে সারা দিনের কাজের পর্যালোচনা করার সময় রুটিনটি কতটুকু মেনে চলতে পারলে তা পর্যালোচনা করো। কেন পারোনি তার কারণ উদঘাটন ও কীভাবে রুটিনটি আরও সুন্দরভাবে অনুসরণ করতে পারো তার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এই পর্যালোচনার ফলে দেখবে রুটিন ব্যত্যয়ের ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে। রুটিনের কোনো অংশ তোমার জীবনযাপনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে বড়দের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে তা পরিবর্তন করতে পারো। এভাবে কয়েকবার সংযোজন, বিয়োজনের ফলে তুমি পাবে তোমার উপযোগী চূড়ান্ত রুটিন।

নতুন বছরের পরিকল্পনার প্রথমেই লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। লক্ষ্য নির্ধারণে তাড়াহুড়া করা যাবে না। অস্থির না হয়ে সুস্থিরভাবে ভেবে নতুন বছরের নতুন কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। তবে ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিতে হবে। মনের বিরুদ্ধে কিছু করতে গেলে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। লক্ষ্য নির্ধারণের পরে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ শুরু করতে হবে। এর জন্য কোনো শুভ দিন বা শুভ ক্ষণের অপেক্ষা করা যাবে না। যা আছে তাই নিয়েই শুরু করতে হবে। লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য উচ্চাভিলাষী হওয়া ভালো কিন্তু ঝোঁকের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। পড়াশোনাকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না। পড়াশোনায় ভবিষ্যতের ভিত গড়ে দেয়। লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য নতুন নতুন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বছরে নতুন দক্ষতা অর্জনের প্রতি মনোযোগ দাও।

বই জ্ঞানের আধার, বিনোদনেরও। বইকে বলা হয় জ্ঞানী ব্যক্তিদের কণ্ঠস্বর। বই হতে পারে দক্ষতা অর্জনে সহায়ক। অনুপ্রেরণাদায়ক বই বা নির্মল আনন্দের জন্য বিনোদনধর্মী বই পড়া যেতে পারে। নতুন বছরটি শুরু করতে পারো আগ্রহের বিষয়টি শেখার মাধ্যমে। শখের বসে যদি নাচ, গান, আবৃত্তির চর্চা করে থাকো তাহলে এখনই সময় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষতাকে শাণিত করার। ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে, আত্মকেন্দ্রিকতা এবং আমিত্বকে বিসর্জন দিতে হবে। তোমাদের হাত ধরেই আগামীর বাংলাদেশ, আগামীর বিশ্ব নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। যেখানে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সামাজিক নিরাপত্তা, পারস্পারিক শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি বজায় থাকবে শতভাগ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে