শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মোবাইল ফোন আবিষ্কার

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মোবাইল ফোন আবিষ্কার

অতীতের কোন ইলেকট্রনিক পণ্য মোবাইল ফোনের মতো এত বিস্তার ঘটেনি। মোবাইল ফোন এখন আর কোন বিলাসিতা পণ্য নয় বরং দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় একমাত্র অনুষঙ্গ। প্রায় পাঁচ দশক আগেই মোবাইল ফোনের তুলনায় আজকের এক একটি স্মার্টফোন যেন সুপার কম্পিউটার। আধুনিক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মোবাইল।

১৯৭৩ সালে আমেরিকার নিউওয়ার্ক শহরের ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার প্রথম মোবাইল ফোন তৈরি করেন। তাই মার্টিন কুপার কে

মোবাইল ফোনের জনক বলা হয়। তিনি তখনকার ছোট্ট টেলিকম কোম্পানি গঙঞঙজঙখঅ তে কাজ করতে।

মার্টিন "মার্টি" কুপার জন্ম: ২৬ ডিসেম্বর, ১৯২৮) শিকাগোতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত মার্কিন আবিষ্কারক। তারবিহীন টেলিফোন শিল্প হিসেবে মোবাইল ফোনের পথিকৃৎ হিসেবে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত হয়ে আছেন। এ শিল্পে তার সর্বমোট এগারোটি মেধাস্বত্ব রয়েছে। বর্তমান সময়ের বেতার তরঙ্গ ব্যবস্থাপনায় অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আবিষ্কারক তিনি।

১৯৫০ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন কুপার। স্নাতক ডিগ্রি শেষে কোরিয়ার যুদ্ধের সময় মার্কিন নৌবাহিনীর সংরক্ষিত বাহিনীতে সাবমেরিন অফিসারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন নিজেকে ১৯৫৭ সালে আইআইটি থেকেই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে এখান থেকেই সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

তার স্বপ্ন ছিল এমন একদিন আসবে যখন সবার হাতে নিজস্ব ফোন থাকবে আর সেই ফোন দিয়ে যেকোনো সময় তার সাথে যোগাযোগ করা যাবে। সেই সময় টেলিফোন মানে ছিল এমন একটি জিনিস যা মানুষের কাজের টেবিলে বা বাড়িতে তারের সাথে যুক্ত থাকতো।

সে কারণে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের ধারণা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী এর মতো ছিল। উরপশ ঞৎধপু নামে আমেরিকান একটি কমিটির চরিতেরা এক ধরনের রেডিও এর সাহায্যে পরস্পর যোগাযোগ করত।

সেটা দেখে প্রথমবার মার্টিন কপার এর মাথায় মোবাইল ফোনের চিন্তায় এসেছিল। ঠিক সেই জিনিসটা মার্টিন কুপার এর নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি দল মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে তৈরি করেছিল।

১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে নিউওয়ার্কের হিলটন হোটেলে প্রথমবার মোবাইল ফোনের মডেল উপস্থাপন করা হয়। প্রথম মোবাইল ফোনটি ছিল ১০ ইঞ্চি লম্বা, ২ ইঞ্চি চওড়া ও ৪ ইঞ্চি পুরুত্ব। সেই মোবাইল ফোনের ওজন ছিল এক কেজির বেশি।

মাত্র ২০ মিনিট কথা বললে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যেত। সেই ফোন দেখে অনেকে হাসাহাসি করেছিল। তবে সত্যিকার অর্থে সেই সময় এরকম একটি ফোন তৈরি করা ছিল এক ধরনের অসম্ভব চ্যালেঞ্জ।

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম মোবাইল কলটিও করেছেন মার্টিন কুপার। তিনি নিউওয়ার্কের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অঃধহফঃ

কোম্পানিতে কর্মরত তার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুকে কলটি করেছিলেন। অঃধহফঃ শুধু আমেরিকার নয় বরং সমগ্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম কোম্পানি ছিল।

অঃধহফঃ এর আবিষ্কৃত সেলুলিস টেকনোলজি এক প্রযুক্তির অপর বৃত্তি করে মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয়েছিল। হাতে করে ফোন নিয়ে ঘুরার কথা অঃধহফঃ মোটেও ভাবিনি। তারা এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিল মূলত গাড়িতে টেলিফোন সংযোগ করার জন্য।

কিন্তু ছোট্ট কোম্পানি সড়ঃড়ৎড়ষধ তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম অঃধহফঃ এর কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে যায়। তবে প্রথমবার মোবাইল ফোন বাজারে আসতে সময় লাগে আরও দশ বছরের মতো।

১৯৮৩ সালে প্রথম বারের মতোন বাজারে আসে গঙঞঙজঙখঅ উুহধঃধপ ৮০০০ী ফোনটি। সেই সময় ফোনটির দাম ছিল চার হাজার ডলার। এ ছাড়া তখন কলরেটে অনেক বেশি ছিল। সে যুগে মোবাইল ফোন অনেকটা বড়লোককে খেলনা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই ফোনটি অনেকের কাছে ইটের মতো আর কারো কাছে জুতার মত দেখতে মনে হয়েছিল। সেই মোবাইল ফোনটি আমাদের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে তা হয়তো কেউ উপলব্ধি করেনি। আজকাল মোবাইল ফোনে কিবা নেই। বর্তমানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশের বেশি লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এবং ৫১১ কোটির বেশি মানুষ নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সেই সড়ঃড়ৎড়ষধ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমান বিশ্বে স্মার্টফোন বাজারে ৮৬ শতাংশ দখল করে রেখেছে মাত্র দশটি কোম্পানি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে