বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
জেলার নামকরণ

রাজশাহী বিভাগ

  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
রাজশাহী বিভাগ
রাজশাহী বিভাগ

৭. রাজশাহী জেলা : এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রের মতে রাজশাহী রানী ভবানীর দেওয়া নাম। অবশ্য মি. গ্রান্ট লিখেছেন, রানী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহী বলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামে উলেস্নখ পাওয়া যায়। পদ্মার উত্তরাঞ্চল বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে পাবনা পেরিয়ে ঢাকা পর্যন্ত এমনকি নদীয়া, যশোর, বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে এই এলাকা রাজশাহী চাকলা নামে অভিহিত হয়। অনুমান করা হয় 'রামপুর' এবং 'বোয়ালিয়া' নামক দুটি গ্রামের সমন্বয়ে রাজশাহী শহর গড়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে 'রামপুর-বোয়ালিয়া' নামে অভিহিত হলেও পরে রাজশাহী নামটিই সর্ব সাধারণের কাছে সমধিক পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে আমরা যে রাজশাহী শহরের সঙ্গে পরিচিত, তার শুরু ১৮২৫ সাল থেকে। রামপুর-বোয়ালিয়া শহরের নামকরণ রাজশাহী কী করে হলো তা নিয়ে বহু মতামত রয়েছে। রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলক্ষিত হয়। সংস্কৃত 'রাজ' ও ফার্সি 'শাহ'-এর বিশেষণ 'শাহী' শব্দযোগে 'রাজশাহী' শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বা বাদশাহ বা বাদশাহী। তবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ দুবার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন শাকসবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি, ভুলত্রম্নটি, চাষ-আবাদ, জমি-জিরাত, ধার-দেনা, শিক্ষা-দীক্ষা, দীন-দুঃখী, ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, দান-খয়রাত, পাহাড়-পর্বত, পাকাপোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনি করে অদ্ভুত ধরনের এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও যে এভাবে ঘটে থাকতে পারে তা মোটেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ নামকরণ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনীও রয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয় এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাস, এজন্য এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কেউ বলেন, রাজা গণেশের সময় (১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব। ১৯৮৪ সালে রাজশাহীর ৪টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং নবাবগঞ্জ- এ চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়।

৮. সিরাজগঞ্জ জেলা : বেলকুচি থানায় সিরাজউদ্দিন চৌধুরী নামক এক ভূস্বামী (জমিদার) ছিলেন। তিনি তার নিজ মহলে একটি 'গঞ্জ' স্থাপন করেন। তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় সিরাজগঞ্জ। কিন্তু এটা ততটা প্রসিদ্ধি লাভ করেনি। যমুনা নদীর ভাঙনের ফলে ক্রমে তা নদীগর্ভে বিলীন হয় এবং ক্রমেই উত্তর দিকে সরে আসে। সে সময় সিরাজউদ্দীন চৌধুরী ১৮০৯ সালের দিকে খয়রাতি মহল রূপে জমিদারি সেরেস্তায় লিখিত ভূতের দিয়ার মৌজা নিলামে খরিদ করেন। তিনি এ স্থানটিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান স্থানরূপে বিশেষ সহায়ক মনে করেন। এমন সময় তার নামে নামকরণকৃত সিরাজগঞ্জ স্থানটি পুনঃনদীভাঙনে বিলীন হয়। তিনি ভূতের দিয়ার মৌজাকেই নতুনভাবে 'সিরাজগঞ্জ' নামে নামকরণ করেন। ফলে ভূতের দিয়ার মৌজাই 'সিরাজগঞ্জ' নামে স্থায়ী রূপ লাভ করে।

1
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে