বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

সুধীরবরণ মাঝি, শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় হাইমচর, চাঁদপুর
  ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ
দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

অধ্যায়-১১

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়- বনভূমির গুরুত্ব অপরিসীম।

১৯৮৬ সালে সিলেট জেলার হরিপুরে- প্রাকৃতিক গ্যাসের সপ্তমকূপে তেল পাওয়া গেছে।

মৌলভীবাজার জেলার বরমচাল তেলক্ষেত্রটি থেকে তেল উত্তোলিত হয়- দৈনিক প্রায় ১২০০ ব্যারেল।

দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানি ব্যবহারের প্রায় ৭৩ শতাংশ পূরণ করে- প্রাকৃতিক গ্যাস।

বর্তমানে ১৯টি গ্যাসক্ষেত্রের ৮৩টি কূপ থেকে- গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে।

শক্তির অন্যতম উৎস- কয়লা।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার কয়লাক্ষেত্র থেকে- কয়লা উত্তোলিত হয়- দৈনিক প্রায় ৩,০০০ মেট্রিক টন।

কলকারখানা, রেলগাড়ি, জাহাজ প্রভৃতি চালানোর জন্য- কয়লা ব্যবহৃত হয়।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আবিষ্কৃত ৫টি কয়লাক্ষেত্রের মোট মজুদের পরিমাণ- ২,৭০০ মিলিয়ন টন।

বিটুমিনাস ও লিগনাইট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে- রাজশাহী, বগুড়া নওগাঁ ও সিলেট জেলায়।

শক্তি, আলো, তাপ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন -খনিজ তেল।

প্রশ্ন: সিমার বাড়ি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। সেখানে এমন একটি শিল্প গড়ে উঠেছে যার কাঁচামাল বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়। অপরদিকে পলির বাড়ি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেখানে একটি শিল্প গড়ে উঠেছে যা দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ক. শিল্প কী?

খ. বাংলাদেশে পাট শিল্প গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. সিমার অঞ্চলে গড়ে ওঠা শিল্পটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. পলির অঞ্চলের শিল্পটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কতটুকু সে সম্পর্কে মতামত দাও।

উত্তর:

ক. প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করা হলো শিল্প।

খ. বাংলাদেশে পর্যাপ্ত ও উৎকৃষ্টমানের পাট চাষ হওয়ায় এদেশে পাট শিল্প গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে কৃষিনির্ভর শিল্পগুলোর মধ্যে পাট শিল্প অন্যতম। কাঁচামালের সহজলভ্যতা এ দেশে পাট শিল্পের উন্নতিতে সহায়তা করছে। এদেশে পাটের দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক রয়েছে। সর্বোপরি পাট শিল্পের প্রতি সরকারের সাহায্য ও সহযোগিতা রয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশে পাট শিল্প গড়ে উঠেছে।

গ. সিমার অঞ্চল হলো দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বস্ত্রশিল্প প্রসার লাভ করেছে। বস্ত্রশিল্প বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান শিল্প। বাংলাদেশের আবহাওয়া বস্ত্রশিল্পের অনুকূল, তারপরও বাংলাদেশ বস্ত্রশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। বাংলাদেশের বস্ত্রকলগুলো বিদেশ থেকে আমদানিকৃত তুলা ও সুতা দিয়ে পরিচালিত হয়। উদ্দীপকে এজন্যই বলা হয়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়। বাংলাদেশ প্রতি বছর জাপান, সিঙ্গাপুর, হংকং, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তুলা, সুতিবস্ত্র ও সুতা আমদানি করে থাকে। মূলত এ আমদানিকৃত কাঁচামালের ওপর ভর করেই সিমার অঞ্চলে তথা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বস্ত্রশিল্প প্রসার লাভ করেছে।

ঘ. পলির বসবাসকৃত অঞ্চল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সার শিল্প প্রসার লাভ করেছে। সার দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৭টি সার কারখানা থেকে সার উৎপাদিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পের মধ্যে সার অন্যতম। প্রাকৃতিক গ্যাসের সহজলভ্যতার জন্য সার শিল্পের উন্নয়নে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। হরিপুরের প্রাকৃতিক গ্যাস ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানায় ব্যবহৃত হয়। ঘোড়াশাল সার কারখানায় তিতাস গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র ২৫টি এবং বর্তমানে দেশে ১৬.১২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। বর্তমানে দেশের ১৯টি গ্যাসক্ষেত্রের ৮৩টি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। তাই প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর সার শিল্পের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময়।

প্রশ্ন: দৃশ্যকল্প-১ : রশিদ সাহেব তার গ্রামের বাড়ি কাজীপুরে ৬০টি তাঁত নিয়ে একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। সেখানে তার গ্রামের নারী-পুরুষরা কাজ করে।

দৃশ্যকল্প-২ : মামুন সাহেব ৬ কোটি টাকা মূলধনে সাভারে একটি পোশাক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানকার উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করেন।

ক. বাংলাদেশে কয়টি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে?

খ. বনজ সম্পদ রক্ষায় কয়লার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

গ. আকার অনুযায়ী রশিদ সাহেবের শিল্পটি কী ধরনের ব্যাখ্যা কর।

ঘ. দৃশ্যকল্প- ১ ও দৃশ্যকল্প-২ এর মধ্যে কোন শিল্পটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অধিক ভূমিকা রাখে? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর:

ক. বাংলাদেশে ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।

খ. বনজ সম্পদ রক্ষায় কয়লা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কয়লা জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ও লাকড়ির পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন- বাংলাদেশে বর্তমানে বড়পুকুরিয়া থেকে উত্তোলিত কয়লার ৬৫ শতাংশ বড়পুকুরিয়া তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রে বিদু্যৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। অবশিষ্ট ৩৫ শতাংশ কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে ইটভাটা, কলকারখানাসহ অন্যান্য খাতে সরাসরি কাঠ বা লাকড়ি পোড়ালে পরিবেশের যে দূষণ হয় কয়লা ব্যবহার করলে সেই দূষণ হয় না। এভাবে বনজ সম্পদ রক্ষা ও দূষণ রোধে কয়লা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সাহায্য করে।

গ. আকার অনুযায়ী রশিদ সাহেবের শিল্পটি ক্ষুদ্র শিল্প। সাধারণত শিল্পের আকার অনুসারে একে তিন ভাগের ভাগ করা যায়। যথা: ১. ক্ষুদ্র শিল্প, ২. মাঝারি শিল্প, ৩. বৃহৎ শিল্প। এর মধ্যে ক্ষুদ্র শিল্পে কম শ্রমিক ও স্বল্প মূলধনের প্রয়োজন হয়। এ শিল্পে শ্রমিক ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি ও উপকরণের সাহায্যে সম্পন্ন করে থাকে। কম কাঁচামালে স্বল্প উৎপাদন করা হয়। এই ধরনের শিল্পগুলো গ্রাম ও শহর এলাকায় ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠে, যেমন- তাঁত শিল্প, বেসরকারি কারখানা, ডেইরি ফার্ম প্রভৃতি। উদ্দীপকের দৃশ্যকল্প-১ এ রশিদ সাহেব তার গ্রামের বাড়ি কাজীপুরে ৬০টি তাঁত নিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। সেখানে তার গ্রামের নারী-পুরুষরা কাজ করে। সুতরাং আকার অনুযায়ী রশিদ সাহেবের শিল্পটি ক্ষুদ্র শিল্প।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে