রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
  ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মাইক্রোফোন

মাইক্রোফোন এমন এক ধরনের যন্ত্র, যাকে মাইক ও বলা হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের সেন্সর হিসেবে কাজ করে- যা শব্দ শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে। কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, অডিও রেকর্ডার, শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র, মেগাফোন, রেডিও বা টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর বহুল ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। আধুনিক কালের বেশিরভাগ মাইক্রোফোনই তড়িৎ-চুম্বকীয় আবেশ, ক্যাপাসিট্যান্সের পরিবর্তন, পিজোইলেক্ট্রিক ইফেক্ট

অথবা বাতাসের চাপের পার্থক্য ব্যবহার করে ইলেকট্রিক সিগন্যাল তৈরি করে। মাইক্রোফোনগুলো এক ধরনের ট্রান্সডুকার হয় অর্থাৎ এটি এমন একটি যন্ত্র যা শক্তিকে এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তর করে। মাইক্রোফোনের শাব্দিক শক্তি (শব্দ তরঙ্গ) বৈদু্যতিক শক্তির (অডিও সংকেত) মধ্যে রূপান্তর হয়।

মাইক্রোফোনের প্রকারভেদ : বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোফোন আছে।

কন্ডেনশার মাইক্রোফোন : এই ধরনের মাইক্রোফোনগুলো মূলত ইনডোরে বা রের্কডিং স্টুডিওতে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। এগুলো খুব সেনসেটিভ সাউন্ড ক্যাচ করে থাকে খুব অল্প নয়েজও এটি একদম ক্লিয়ারলি পিক করতে পারে তাই এদের সাউন্ড কোয়ালিটি সবচেয়ে ভালো হয়ে থাকে। তবে সমস্যা হলো মূল সাউন্ডের পাশাপাশি যদি আশেপাশে থেকে বারতি কোনো সাউন্ড আসে (যেমন গাড়ির হন, পশুপাখির ডাক) তখন এটি মূল সাউন্ডের সঙ্গে ক্যাপচার করে ফেলে তাই একদম সাউন্ডপ্রম্নফ রুম ছাড়া এটি ব্যবহার

করা প্রায় অসম্ভব।

ডায়নামিক মাইক্রোফোন : এই ধরনের মাইক্রোফোনগুলো আউটডোর বা লাইভ অনুষ্ঠানে ব্যবহারের উপযোগী। কারণ এগুলো বারতি নয়েজ একদমি ক্যাচ করতে পারে না। শুধু মাইক্রোফোনের খুব কাছে থেকে যে সাউন্ড করা হয় সেগুলোই ক্যাচ করতে পারে তাই এগুলো বাহিরে অনেক নয়েজযুক্ত স্থানে ব্যবহার করা হয়। তবে এই ধরনের মাইক্রোফোনের ওভারল সাউন্ড কোয়ালিটি কন্ডেনশার মাইক্রোফোন থেকে কিছুটা কম।

এছাড়াও, বিশেষ কিছু মাইক্রোফোন রয়েছে যেমন নাটক, শর্ট ভিডিও তৈরি করার জন্য বুম মাইক্রোফোন, ইন্টারভিডিও ও টিউটোরিয়াল তৈরির জন্য ক্লিপ মাইক্রোফোন, ইউটিউবে বস্নগ করার জান্য শটগান

মাইক্রোফোন রয়েছে।

ইতিহাস :মাইক্রোফোন বৈদু্যতিক ভোল্টেজে শব্দ তরঙ্গের রূপান্তর। একটি মাইক্রোফোন একটি ইলেকট্রিক পাওয়ারের মধ্যে শব্দ ক্ষমতা রূপান্তরের জন্য একটি ডিভাইস যা মূলত অনুরূপ ওয়েভ বৈশিষ্ট্য। মাইক্রোফোন ভোল্টেজের মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গ রূপান্তরিত করে- যা অবশেষে স্পিকারগুলোর মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়। এটি প্রথম টেলিফোন এবং তারপর রেডিও ট্রান্সমিটারের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৮২৭ সালে, স্যার চার্লস গ্রাস্টস্টন 'মাইক্রোফোন' শব্দটি মুদ্রণে প্রথম ব্যক্তি ছিলেন। ১৮৭৬ ??সালে, এমিল বার্লিনের প্রথম টেলিফোন ভয়েস ট্রান্সমিটার হিসেবে ব্যবহৃত মাইক্রোফোন আবিষ্কার করেন। মার্কিন শত শত বিশ্লেষণে, এমিল বার্লিনের একটি বেল কোম্পানির টেলিফোন প্রদর্শিত হয়েছিল এবং নতুন উদ্ভাবিত টেলিফোনের উন্নতির উপায় খুঁজতে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। ১৮৭৮ সালে, ডেভিড এডওয়ার্ড হিউজেস কর্তৃক কার্বন মাইক্রোফোন আবিষ্কৃত হয় এবং পরবর্তী সময়ে এটি ১৯২০-এর দশকে উন্নত হয়। হিউজসের মাইক্রোফোনটি বর্তমানে ব্যবহৃত বিভিন্ন কার্বন মাইক্রোফোনের জন্য প্রাথমিক মডেল ছিল। রেডিও আবিষ্কারের মাধ্যমে, নতুন সম্প্রচার মাইক্রোফোনের তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪২ সালে রেডিও সম্প্রচারের জন্য রিবন মাইক্রোফোন আবিষ্কার করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সালে, বেল ল্যাবরেটরিস গবেষক জেমস ওয়েস্ট এবং গেরহার্ড সাসলার প্যাটেন্ট নং ইলেকট্রাকুওস্টিক ট্রান্সডুকারের জন্য

৩,১১৮,০২২, একটি ইলেক্ট্রিক মাইক্রোফোন তৈরি করে। ঊষবপঃৎবঃ মাইক্রোফোন আরো নির্ভরযোগ্য, উচ্চ নির্ভুলতা, কম খরচে, এবং একটি ছোট আকারের ছিল। এটি মাইক্রোফোন শিল্পের মধ্যে বিপস্নব করেছে। মাইক্রোফোনের ব্যবহার : মাইক্রোফোন একটি অতি প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা শব্দ শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে। যারা লাইভ গান গেয়ে থাকেন কিংবা নিজের ভয়েস ওভার করেন অথবা স্টুডিওতে গান রেকর্ড বা বিভিন্ন প্রকার সাউন্ড রেকর্ড করে থাকেন তাদের কাছে এটি অতি প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। আজকাল অনেকে ইউটিউবে নিজের ক্রিয়েটিভিটি প্রদর্শনের জন্য ভিডিও দিয়ে থাকেন আর ভিডিওতে সাউন্ড অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তাই এখনকার প্রায় প্রতিটি ইউটিউবারের কাছেও মাইক্রোফোন খুব পরিচিত। এছাড়াও মাইক্রোফোনের রয়েছে বিভিন্ন ডিরেকশনাল মুড। যেমন :

কার্ডীয় মুড: এই ডিরেকশনের মাইক্রোফোনগুলো শুধু মাইক্রোফোনের সামনের দিকে থেকে সাউন্ড ক্যাচ করে থাকে এবং বাকি যে তিনটি দিক রয়েছে পেছনে, ডানে ও বামে থেকে কোনো প্রকার সাউন্ড ক্যাচ করে না।

বাই-ডিরেকশনাল মুড: এই ডিরেকশনের মাইক্রোফোনগুলো মূলত সামনের ও পেছনের দিক থেকে সাউন্ড ক্যাচ করতে পারে মাইক্রোফোনের ডানে ও বামে

থেকে কোনো সাউন্ড নিতে পারে না। ওমনি-ডিরেকশনাল মুড. এই ডিরেকশনের মাইক্রোফোনগুলো তার আশপাশে চারদিক থেকেই সমান সাউন্ড ক্যাচ করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে