এ দিকে টেক জায়ান্ট গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই
জানিয়েছেন, গুগলের নতুন সব সফটওয়্যার ডেভেলপে ২৫ শতাংশেরও বেশি কোড তৈরি করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।
বাংলাদেশে কিছু কিছু খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার শুরু করলেও
বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর জন্য দরকার
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও দক্ষ জনশক্তি। বর্তমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে ডিজিটাল
প্রযুক্তির অন্যতম নিয়ামক হচ্ছে ইন্টারনেট স্পিড। মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। ওয়েব সার্ভিস প্রতিষ্ঠান স্পিডটেস্টের মার্চ ২০২৪-এর সূচকে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এদিকে মোবাইল ইন্টারনেটের পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১০৮তম, যেটি এআই টুলস ব্যবহারের অন্তরায়। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ডসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারতও তাদের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কারিকুলামে কোডিং ও এআই প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছে। অতিসম্প্রতি চীন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
পাঠ্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার এক নির্দেশনায় বলেছে, দেশের 'উদ্ভাবনী প্রতিভার চাহিদা মেটাতে' এবং শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা বাড়াতে স্কুলগুলোর মধ্যে এআই শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। নির্দেশনায় বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম ধাপে শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তির প্রাথমিক ধারণা ও অভিজ্ঞতা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। প্রাথমিকের শেষ ধাপে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের এআই সম্পর্কিত বিষয়গুলো বোঝা এবং সেগুলো প্রয়োগের দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা এআই কেন্দ্রিক উদ্ভাবনী প্রকল্প তৈরি এবং এর উচ্চতর প্রয়োগের দিকে ফোকাস করবে। এর আগে চীন ২০১৭ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বের নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে একটি জাতীয় পরিকল্পনা প্রকাশ করে। এর পর ২০১৮ সালে চীনের পাঁচ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এআই বিষয়ে স্নাতক প্রোগ্রাম চালু করা হয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে আমাদের দেশের শিক্ষা কারিকুলামে ও নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে কোডিং, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট এআই টুলস ও ওয়েব ডেভেলপিং ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। প্রযুক্তি- জ্ঞানে আমরা আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে আর পিছনে দেখতে চাই না। ফলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি জাতির অনুরোধ, আমাদের দেশের শিক্ষা কারিকুলামে নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে কোডিং, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট এআই টুলস ও ওয়েব ডেভেলপিং ভাষা অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিশ্ব নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করা। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করা, যাতে তারা ডিজিটাল দক্ষতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় শক্তিশালী হতে পারে।
এ লক্ষ্যে প্রতি বছর সরকারীভাবে উপজেলা পর্যায় হতে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা প্রয়োজন। এছাড়াও দেশের সকল মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোতে হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগসহ আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করতঃ শিক্ষকদের প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ করে কোডিং ও এআই টুলস সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। অধিকন্তু', স্কুলগুলোর লাইব্রেরিতে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক বইয়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ করতে হবে।
পরিশেষে, আমাদের দেশের স্কুল শিক্ষাথীরা যেন কোডিং তথা লজিকের খেলায় পিছিয়ে না পড়ে সে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।