প্রিয় পরীক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র নিয়ে
আলোচনা করা হলো
শব্দ
প্রশ্ন: ৪। 'উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে' উক্তিটি আলোচনা কর।
উত্তর : অর্থহীন অথচ অর্থদ্যোতক যেসব অব্যয় নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের আগে বসে শব্দগুলোর অর্থ সংকোচন, প্রসারণ বা অন্য কোনো পরিবর্তন সাধন করে থাকে, তাদের বাংলায় উপসর্গ বলে। যেমন : আগমন, পরিদর্শন, উপবন ইত্যাদি।
উপসর্গের কোন অর্থবাচকতা নেই, অর্থদ্যোতকতা আছে মাত্র। এগুলো নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে যদি স্বাধীনভাবে থাকে, তাহলে এদের কোনো অর্থ হয় না। আর যদি নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দ কোনো একটির সঙ্গে যুক্ত হয়, তবেই এগুলো আশ্রিত শব্দকে অবলম্বন করে বিশেষ বিশেষ অর্থদ্যোতকতা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন : বি + হার = বিহার, আ + হার = আহার, উপ + হার = উপহার ইত্যাদি।
তবে বাংলায় 'অতি' ও 'প্রতি' এ দুটো উপসর্গ কখনো কখনো স্বাধীনভাবেও প্রয়োগ হতে পারে। যেমন : অতি লোভে তাঁতি নষ্ট, মাথাপ্রতি এক টাকা করে দাও ইত্যাদি।
প্রশ্ন: ৫। নিচের উপসর্গগুলো দিয়ে শব্দ গঠন করে, তা বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
অ, আ, প্রতি, প্র, অতি, অনু, বি, পরি, উপ, সু, নি ইত্যাদি।
উত্তর :
অ + চল = অচল, গাড়িটি অচল
আ + মরণ = আমরণ, আমরণ মানুষের সেবা করে যাব।
প্রতি + দিন = প্রতিদিন, প্রতিদিন আমি প্রার্থনা করি।
প্র + নাম = প্রণাম, গুরুজনকে প্রণাম কর।
অতি + রিক্ত = অতিরিক্ত, অতিরিক্ত কোনো কাজ ভালো নয়।
অনু + রোধ = অনুরোধ, সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।
বি + হার = বিহার, রাজা গেলেন বিহারে।
পরি + ভ্রমণ = পরিভ্রমণ, পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করা উচিত।
উপ + গ্রহ = উপগ্রহ, চাঁদ একটি উপগ্রহ।
সু + পথ = সুপথ, সত্য বল সুপথে চল।
নি + খুঁত = নিখুঁত, কাজটি একদম নিখুঁত।
(এভাবে প্রতিটি উপসর্গ দিয়ে কাজ করতে পার।)
প্রশ্ন: ৬। নিঃ অথবা দুঃ উপসর্গের সঙ্গে সন্ধিতে বিসর্গ অক্ষুণ্ন রেখে পাঁচটি শব্দ তৈরি কর।
উত্তর : দুঃ উপসর্গের সঙ্গে সন্ধিতে বিসর্গ অক্ষুণ্ন রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ হচ্ছে-
দুঃ + শাসন = দুঃশাসন, দুঃ + সাধ্য = দুঃসাধ্য, দুঃ + স্বপ্ন = দুঃস্বপ্ন, দুঃ + সংবাদ = দুঃসংবাদ, দুঃ + সাহস = দুঃসাহস
নিঃ উপসর্গের সঙ্গে সন্ধিতে বিসর্গ অক্ষুণ্ন রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ হচ্ছে-
নিঃ + শেষ = নিঃশেষ, নিঃ + স্বার্থ = নিঃস্বার্থ, নিঃ + শর্ত = নিঃশর্ত, নিঃ + সঙ্গ = নিঃসঙ্গ, নিঃ + শ্বাস = নিঃশ্বাস
প্রশ্ন: ৭। উপসর্গ ও অনুসর্গের মাঝে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর :
উপসর্গ
১. উপসর্গ শব্দের আগে বসে শব্দে অর্থ সংকোচন, প্রসারণ ও পরিবর্তন সাধন করে।
২. উপসর্গ পরবর্তী ধাতু বা শব্দের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকে।
৩. অনুসর্গের অর্থ আছে।
৪. উপসর্গের স্বতন্ত্র প্রয়োগ নেই।
৫. উপসর্গ নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের আগে বসে, পরে নয়।
অনুসর্গ
১. অনুসর্গ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে।
২. অনুসর্গ শব্দের সঙ্গে যুক্ত থাকে না।
৩. উপসর্গের নিজের কোনো অর্থ নেই, তবে অন্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অর্থদ্যোতকতা সৃষ্টি করতে পারে।
৪. অনুসর্গের স্বতন্ত্র প্রয়োগ আছে
৫. অনুসর্গ নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের আগে-পরে উভয় স্থানেই বসতে পারে।
প্রশ্ন: ৮। সন্ধি এবং সমাসের মধ্যে পার্থক্য।
উত্তর :
সন্ধি
০১. সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন
০২. পাশাপাশি দুই বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে।
যেমন : অ + অ = আ, নর + অধম = নরাধম
সমাস
০১. সমাস শব্দের অর্থ সংক্ষেপ
২. পরস্পর অর্থ সম্পর্কযুক্ত একাধিক পদের একপদে পরিণত হওয়ার নাম সমাস। যেমন : মিশির মতো কালো = মিশকালো