সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

উৎস নাট্যদলের 'ইদানীং শুভবিবাহ'

বিনোদন রিপোর্ট
  ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
উৎস নাট্যদলের 'ইদানীং শুভবিবাহ'
উৎস নাট্যদলের 'ইদানীং শুভবিবাহ'

উৎস নাট্যদলের ৪র্থ প্রযোজনা 'ইদানীং শুভবিবাহ'। মমতাজউদদীন আহমদ রচিত এ নাটকটি বুধবার সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে উৎস নাট্যদলের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঞ্চস্থ হয়েছে। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন হামিদুর রহমান পাপ্পু। মমতাজউদদীন আহমদ স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের পথিকৃৎ। তার মতো নাট্যকাররাই জাগরণ সৃষ্টি করেছেন এ দেশের নাট্যাঙ্গনে। পূর্ব পাকিস্তানের নাট্য আন্দোলন থেকে শুরু যার সূচনা, তারপর একাধারে ভাষা আন্দোলন, '৬৯-এর গণ-অভু্যত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, গ্রম্নপ থিয়েটার আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সব আন্দোলনে যিনি ছিলেন প্রথমসারির মানুষ। তিনি বাংলাদেশে নাটককে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। আশির দশকের লেখা তার 'ইদানীং শুভবিবাহ' নাটকটির বিষয়বস্তু আজও প্রাসঙ্গিক এবং যুগোপযোগী। বিংশ শতাব্দীর ২০২৪ সালে এসেও আমরা যৌতুকের থাবা থেকে মুক্তি পাচ্ছি না। যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি, বর্তমান সমাজেও যৌতুক অনাদায়ের কারণে অসংখ্য নারী অপমৃতু্য, নিগৃহীতা, গলায় ফাঁসির দড়ি ইত্যাদির শিকার হচ্ছে। অসংখ্য ছোট শিশু মায়ের আদরের কোল হতে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিশপ্ত যৌতুকের দাবি মেটাতে গিয়ে অনেক কন্যার দরিদ্র পিতা-মাতা সর্বস্ব বিক্রি করে নিরন্ন ও দুস্থ হয়ে পড়ে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কনের বাবা বাহাদুরি করে স্বেচ্ছায় যৌতুক দিয়ে নিজের কন্যাকে নিজের অজান্তেই পণ্য বানিয়ে দেন। আবার জোর গলায় বলেন, বিয়েতে আমার মেয়েকে একটা সুতা থেকে শুরু করে গাড়ি-বাড়ি সব দিয়েছি। গণমাধ্যমের এক অনুসন্ধানে ঢাকার আদালতের বিচারিক নিবন্ধন খাতার হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, গত ১৭ বছরে ঢাকায় ৩৭৪ জন নারীকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে। প্রতিবছর ঢাকায় যৌতুকের জন্য গড়ে ২২ নারীকে হত্যা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর এলাকায় গত এক বছরে যৌতুকের জন্য ১৪ জন নারী হত্যার শিকার হন। এই নাটকের মূল লক্ষ্য, "সকলের সচেতনতার মাধ্যমে 'যৌতুক' ব্যাধির অবসান এবং বিশ্বাসে ভরা ভালোবাসাময় সুখী পরিবার গঠন।'' নাটকের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি নাটজন ঝুনা চৌধুরী, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মিজানুর রহমান ও আহাম্মেদ গিয়াস। আরও উপস্থিত ছিলেন উৎস নাট্যদলের সভাপতি উজ্জ্বল কুমার মুখার্জী এবং সাধারণ সম্পাদক বি. এম. সুবীর। নাটকের নির্দেশক হামিদুর রহমান পাপ্পু বলেন, এই নাটকের মূলকথা হলো সচেতনাতার মাধ্যমে যৌতুক নামক অভিশাপের অবসান, সামাজিক বৈষম্যের বিপরীতে সাম্যের জয়গান, পারিবারিক পরস্পরের আস্থাশীলতার অন্বেষণ, তথা মানবতার উন্মেষের লক্ষ্যে এ নাটকের সৃজন ও মঞ্চায়ন। উৎস নাট্যদলের সাধারণ সম্পাদক বি. এম. সুবীর বলেন, আমরা মনে করি নাটক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার এবং নাটক বিবাহ বিভ্রাট সেই লড়াইয়ে এক বলিষ্ঠ অংশীদার। নাটকের অভিনয় করেছেন রাহাত হোসেন, হাসিনা আকতার নিপা, মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন, লাভলী আক্তার, সজল চৌধুরী, মাজেদ আহমেদ, দুর্জয় রায়, অঙ্কিত বিপুল, মিতু রহমান, রোদেলা আহমেদ, তন্ময় আহমেদ ও অর্থী দাশ।

নাটকের নেপথ্যে কাজ করেছেন আলো পরিকল্পনায় ঠান্ডু রায়হান, আবহ সংগীত পরিকল্পনায় মো. আলমগীর, মঞ্চ পরিকল্পনায় তানজিকুন, কোরিওগ্রাফিতে জয়নুল ইসলাম সৈকত, রূপসজ্জয় শুভাশিষ দত্ত তন্ময়, প্রকাশনা ডিজাইন ও পুঁথি রচনায় হামিদুর রহমান পাপ্পু, আলোক প্রেক্ষাপণে লামিয়া, প্রযোজনা সমন্বায়ক দুর্জয় রায় এবং প্রযোজনা অধিকর্তায় উজ্জ্বল কুমার মুখার্জী ও বি. এম. সুবীর।

1
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে