বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করতে বলেছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এসময় কায়সার কামাল বলেন, আমরা এ মামলার আপিল শুনানির উদ্যোগ হিসেবে আদালতে গিয়েছি। এজন্য আমরা কোর্টের অনুমতি নিয়ে নিজেরা পেপারবুকটা তৈরি (আপিলকারীর খরচে) করে আপিল শুনানি করতে পারি, সে আবেদন করেছিলাম। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। পেপারবুক প্রস্তুত করার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল বলেন, এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের দন্ড মওকুফ করা হয়েছে। 'তারপরও আপিল শুনানি কেন?' আমরা বলেছি, তিনি (খালেদা জিয়া) আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি মওকুফ করেছেন। সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা
জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নয়। তিনি অপরাধ করেনননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং তাড়াতাড়ি পেপারবুক তৈরি করে আপিল শুনানির জন্য আদালতের কাছে নিয়ে আসব।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ওই সময় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫'র বিচারক ছিলেন মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে কর্মরত আছেন।
এ মামলায় একই সাজা হয়েছিল অপর তিন আসামিরও। তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। সে সময় হারিছ চৌধুরী পলাতক হন। বাকি আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর রায় ঘোষণা করা হয়।