বিদ্যমান নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই মনে করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আবু হেনা বলেছেন, দেশের চলমান নির্বাচন পদ্ধতিই কার্যকর হতে পারে। এ পদ্ধতির সঙ্গে দেশের মানুষ পরিচিত। নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করে নির্বাচনী আইন প্রয়োগের ওপর। নির্বাচন কমিশনে যোগ্য মানুষ দরকার।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাবেক সিইসি আবু হেনার সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। বৈঠক শেষে আবু হেনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
বিদ্যমান নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তনে সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা বলেন, যেসব দেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু আছে, সেসব দেশ যে ভালোভাবে চলছে, তা কিন্তু নয়। নেপাল, ইসরায়েল- এসব দেশ ভালো চলছে না। দেশে বর্তমান যে নির্বাচন পদ্ধতি, সেটার সঙ্গে মানুষ পরিচিত। এই পদ্ধতিকে কার্যকর করে তোলা দরকার।
১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা আবু হেনা বলেন, আইন কার্যকর করা না হলে যত সংস্কার বা ভালো আইন করা হোক, তা অর্থবহ হয় না। নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করে নির্বাচনী আইন প্রয়োগের ওপর। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনে যোগ্য মানুষ দরকার। তারা যদি যোগ্য না হন, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে।
রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে আবু হেনা বলেন, প্রার্থী মনোনয়ন আরও সুষ্ঠুভাবে হওয়া দরকার। ওপর থেকে আরোপ নয়, প্রার্থীর মনোনয়ন নিচ থেকে আসতে হবে। স্থানীয়ভাবে ভোটের মাধ্যমে প্রাথমিক নির্বাচনের মতো করে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া দরকার।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রয়োজন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা বলেন, সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হবে, নাকি বর্তমান পদ্ধতিতে চলবে, তা রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে। এটি রাজনৈতিকভাবে ঠিক করলেই ভালো।
এক প্রশ্নের জবাবে আবু হেনা বলেন, যোগ্য লোক নির্বাচন কমিশনে থাকলে রাজনৈতিক সরকারের আমলেও ভালো নির্বাচন করা সম্ভব। ভারতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'আমরা আইনবিধি পর্যালোচনা করছি। আশা করছি, যথাসময় সরকারের কাছে কমিশন প্রস্তাব পেশ করতে পারবে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে
অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। আরও পাব বলে আশা করছি।'
এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অনেক ধরনের প্রস্তাব আসছে। যেমন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে কেউ পক্ষে, কেউ বিপক্ষে প্রস্তাব করেছে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে যদি সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ রকম অনেক বিষয় আছে, যেগুলো বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। ওইসব বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনকেই মূলত সুপারিশ করতে হবে।