শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস

দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতিতে সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতিতে সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা
তিন দফা দাবিতে সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা করেন শিক্ষার্থীরা

কেরানীগঞ্জে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ৩ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থানরত জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে এ প্রতিশ্রম্নতি দিলে তারা সড়ক ছাড়েন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেই তাদের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, 'এগুলো যৌক্তিক দাবি। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থাকবে না, হল থাকবে না- এটা হতে পারে না। আমরা প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছি, দ্রম্নত এসব করা হবে। শিগগিরই শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হবে।'

নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমি জানি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে থাকেন। আমার পরিবারের একজন সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের আবাসিক হল নেই। সে জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। তাদের সব দাবি যৌক্তিক।'

তিনি বলেন, 'বাস্তবতা হলো আমরা তিন দিনের মধ্যে হল করে দিতে পারব না। কিন্তু আর্মির কাছে হস্তান্তর করতে পারি। এর জন্য আমাদের বসতে হবে। আমরা তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করব। যেভাবে দেওয়া যায় সেই কাজ করব।'

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে দুপুর ১২টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন। তাদের কর্মসূচি ছিল শিক্ষাসচিবের কাছে তাদের দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া। কিন্তু তখন সচিব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা না করায় সচিবালয়ের মূল ফটকের সামনে রাস্তার এক পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

বেলা সাড়ে তিনটায় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সচিবালয় থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ভেতরে যায়। সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিব ও উপদেষ্টা নাহিদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহম্মেদও ছিলেন।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে অধ্যাপক নাসির সাংবাদিকদের বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে তিন দিন সময় চাওয়া হয়। বলা হয়, তিন দিন পর তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিব ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও থাকবেন।'

এর আগে বিকাল চারটার দিকে আন্দোলনের সংগঠক রাইসুল ইসলাম বলেছিলেন, 'শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষাসচিবের সঙ্গে দেখা করে দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষাসচিব দেখা না করায় সচিবালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা।' দাবি পূরণে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ১. স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ কর্মকর্তাদের হাতে এই দায়িত্ব দিতে হবে; ২. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে; ৩. অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পুরনো ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; ৪. সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণা করা পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে