দুধ উৎপাদনের ঘাটতি কমাতে আমদানি নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, আমাদের মৎস্য খাত যেমন বৈষম্যের শিকার, তেমনি প্রাণী খাতও অসম সংবাদের শিকার। দুধ উৎপাদনের ঘাটতি কমাতে আমরা বিদেশি, টেকনোলজি ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাই।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্টস ফোরাম (এফএলজেএফ) আয়োজিত 'দেশের ডেইরি খাতের সমস্যা-সম্ভাবনা ও করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকতায় প্রাণিসম্পদ খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তবে আমাদের যে আমিষ জাতীয় খাবারের জোগান তা আসে প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য থেকে। কাজেই এ বিষয়ে যদি আমরা উন্নয়নের চেষ্টা না করি, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, আমদানির নির্ভরতা থাকলে আমাদের গরু-ছাগল পালনে ও দুধ উৎপাদনে যে সম্ভাবনাগুলো আছে তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুধ বলতে আমরা শুধু গরুর দুধকেই বুঝি, কিন্তু বিকল্প হিসেবে মহিষের দুধ থেকেও ঘাটতি পূরণ করা যায়। এখান থেকে দুগ্ধজাতীয় অনেক কিছুই তৈরি করা যায়।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি গরুর তুলনায় দেশি গরুর দুধের উৎপাদনশীলতা কম। কিন্তু আমরা যদি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গরুকে ফিড খাওয়াই তাহলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তার চেয়ে বরং ঘাস লাগিয়ে, গোচারণভূমি বাড়িয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারি। কৃষি খাতে চাষের জন্য আগাছানাশক দ্রব্য ব্যবহার করে গোখাদ্য নষ্ট না করে এটি সমন্বয় করার দরকার আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বড় বড় কোম্পানির নির্ভরশীলতা কমিয়ে সাধারণ কৃষকদের থেকে দুধ সংগ্রহ করে সেটা কী করে শহরে আনা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। শিশুদের মিড ডে মিল হিসেবে দুধের পাশাপাশি ডিমও দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এফএলজেএফের সভাপতি মুন্না রায়হানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান প্রমুখ।