দেশের ৫ জেলায় বিভিন্ন অপরাধে অস্ত্র ও মাদকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মেহেরপুরের গাংনী, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রাম, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও জামালপুরের বকশীগঞ্জে এসব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনীতে ৪ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। গত রোববার রাতে উপজেলার সাহারবাটি-গাড়াডোব সড়কের মিলপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রুইতনপুর গ্রামের সর্দার পাড়ার বাবর আলীর ছেলে ছেলে মতিয়ার রহমান (৪০) ও মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে লিটন হোসেন (৩০)। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মিজানুর রহমান সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, সাহারবাটি-গাড়াডোব সড়কের রাইসমিল এলাকায় দিয়ে মাদক পাচার করা হচ্ছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ সদস্যরা অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেলে অভিনব কায়দায় বহন করা একটি পস্নাস্টিক প্যাকেটে ৪ কেজি গাঁজাসহ মতিয়ার রহমান ও লিটন হোসেন নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ানপাড়া মহলস্নায় অভিযান চালিয়ে রাহিমা আক্তার (২৯) নামে এক মহিলাকে ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি দল। সোমবার গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার রাহিমা পৌর ২নং ওয়ার্ড দেওয়ান পাড়ার ওবায়দুর সরদারের স্ত্রী।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পেুলিশ গত রোববার রাতে গোয়ালন্দ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড দেওয়ান পাড়া এলাকায় আসামির বসত বাড়িতে তলস্নাশি চালায়অ এ সময় রান্না ঘর থেকে সত্তর (৭০) বোতল ফেনসিডিলসহ তাকে গ্রেপ্তার করে। আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, দুপচাঁচিয়ায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে কালাম বাহিনীর প্রধান আবু কালাম আজাদ ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের বাড়িতে তলস্নাসী করে একটি দেশীয় তৈরি পিস্তলসহ বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- গুনাহার ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি তালুচ পশ্চিমপাড়া গ্রামের জমির প্রামানিকের ছেলে আবু কালাম আজাদ(৫৫), তার ভাই আব্দুর রহিম(৪১), তার সহযোগী একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে ইয়াছিন আলী(৪২) ও মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে বাবলু(৫০)। সোমবার ভোর থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, কালামের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে থানায় একাধিক মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা রুজু হলে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

চৌদ্দগ্রাম (কুমিলস্না) প্রতিনিধি জানান, কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক, একাধিক দেশীয় অস্ত্রসহ সালাউদ্দিন খান (৩৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। সালাউদ্দিন উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের কালিয়ারতল (বিষ্ণপুর) এলাকার ে শাহজাহানের খানের ছেলে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রোববার রাতে ফকিরবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী বাড়ি থেকে বন্ধুক এবং দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে চৌদ্দগ্রাম থানায় সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী। তবে এ সময় তার একাধিক সহযোগী পালিয়ে যায়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জাম বলেন, রাতে সালাউদ্দিন খান নামীয় একজনকে অস্ত্রসহ আটক করে চৌদ্দগ্রাম থানায় সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী।

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে গত রোববার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হাসান আলী খান ওরফে আবু রায়হান খান (৩৬) উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের হামেদ আলীর ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা এবং ছাত্রলীগের মিছিলে অংশগ্রহণকারী। তাকে নিজ এলাকা ছাব্বিশা থেকে রোববার দিবাগত রাতে ভূঞাপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে টাঙ্গাইল সদর থানা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তকার দেখিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় পাঠানো হয়।

ভূঞাপুর থানার ওসি একেএম রেজাউল করিম বলেন, হাসান আলী খান ওরফে আবু রায়হান টাঙ্গাইল সদর থানার হত্যা মামলার আসামি। তাকে সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে মাদক বিরোধী উঠান বৈঠকে সমন্বয়কের পরিচয় দেওয়ার পর পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন মাহফুজুর রহমান (২২) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। গত রোববার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াপাড়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক মাহফুজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা কমিটির সদস্য এবং বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বগারচর ইউনিয়নের টাংগারী পাড়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, রোববার রাতে বকশীগঞ্জ থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ নয়াপাড়া গ্রামে উঠান বৈঠকে যোগ দেন। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। পরে স্থানীয়রা তাকে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে চিহ্নিত করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক মাহফুজুর রহমানকে আটক করে।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, মাহফুজ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী। তিনি বৈষম্যবিরোধী কমিটিতে ঢুকে গোপন তথ্য ছাত্রলীগের কাছে পাচার করতেন। নাশকতার ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে।