বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

সেচ সংকটে তাহিরপুরের ২৩ হাওড়ের ইরি বোরো ফসল

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
সেচ সংকটে তাহিরপুরের ২৩ হাওড়ের ইরি বোরো ফসল
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সেচ পানির তীব্র সংকটে শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়া ইরি-বোরো ফসলি জমির মাটি -যাযাদি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সেচ পানির তীব্র সংকটে কারনে ইরি-বোরো ফসলি জমির মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোন বৃষ্টিপাত নেই। বৃষ্টিপাত না হলে বোরো ধান উৎপাদন কম হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় হাওড় পারের কৃষকরা।

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা জানান, দেশি জাতের ধান চাষাবাদে সেচ পানির তেমন কোনো প্রয়োজন হয় না। কিন্তু হাইব্রিড জাতীয় ও উচ্চফলশীল ধান চাষাবাদে প্রচুর সেচ পানির প্রয়োজন পড়ে। ফলে একদিকে যেমন সেচ সুবিধা নেই, অন্যদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, দরুন, আঙ্গারুলি হাওড়সহ উপজেলার ২৩টি ছোট-বড় হাওড়ের ১৭ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ইরি বোরো ফসল।

বিভিন্ন হাওড় ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ হাওড়গুলোতে সেচ পানি দেওয়ার কোনরূপ ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন হাওরে নদী তীরবর্তী স্থানে সামান্য জমি রয়েছে। সে জমিগুলোতে যত সামান্য পানি দেওয়া যায়। অপরদিকে সেচ মৌসুমের আগেই নদী নালা, খাল, বিল জলাশয় শুকিয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় কৃষকদের। বর্তমানে হাওড়ে হাওড়ে কৃষকের রোপণকৃত জমিতে পানির অভাবে ধান গাছের পাতা হলদে রং ধারণ করছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলমান থাকলে বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন হাওড় পারের কৃষক।

উপজেলার বৃহৎ বোর ফসল উৎপাদনে হাওড় শনি মাটিয়ান, মহালিয়া, আঙ্গুরুলি অন্যতম। কিন্তু কোনো একটি হাওড়ে বড় কোন সেচ পাম্প নেই। না থাকার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানান, মাটির নীচে পানির স্তর অনেক গভীরে হওয়ায় সেচ পাম্প বসাতে অনেক টাকা খরচ পরে তাদের। সে কারণে তারা সেচ পাম্প বসাতে পারছেন না।

শনি হাওড় মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মিয়া তিনি জানান, শনি হাওড়ের মধ্যবর্তী স্থানে এবার ৩০ একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের উচ্চ ফসলশীল ধান রোপণ করেছেন। কিন্তু জমিতে সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় শুধুমাত্র বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। একই অবস্থার কথা জানালেন মাটিয়ান হাওরপার সূর্যেরগাও গ্রামের কৃষক আশিকনুর মিয়া। তিনি জানান, বৌলাই নদীতে সামান্য পানি থাকালেও তার জমি মাটিয়ান হাওড়ের ভেতর অনেক দূর থাকার কারনে তিনি সেচ পানি দিতে পারছেন না। তাই তিনিও বৃষ্টির অপেক্ষাই করছেন।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিমা বেগম বলেন, ইরি জমিতে প্রচুর পরিমাণ পানির প্রয়োজন। কিন্তু পানির কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কৃষক জমিতে পানি দিতে পারছেন না।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, সেচ সংকটের কারনে অনেক হাওড়েই পানি দেওয়া সম্ভব না। অনেক স্থানে সেচ সুবিধা থাকালেও নদীতে পানি নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে