শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঊর্ধ্বমুখী গোখাদ্যে মন্দা গরুর বাজার, লোকসানে খামারিরা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আপডেট  : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩০
ঊর্ধ্বমুখী গোখাদ্যে মন্দা গরুর বাজার, লোকসানে খামারিরা

নিত্যপণ্যের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে গবাদি পশু বা গো খাদ্যের দাম। ঊর্ধ্বমুখী গো খাদ্যের এ বাজারে গরুর দৈনন্দিন আহার জোগাড় করতে যখন হিমশিম খাচ্ছেন খামারিরা, ঠিক তখনই গো মাংসের দামের ভাটা পড়ায় বড় লোকসানের সম্মূখীন হয়ে পড়েছে গবাদি পশু খামারিরা।

ঈশ্বরদী উপজেলা সর্ববৃহৎ গরুর হাট অরণকোলা ও তৎসংলগ্ন এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরুর ব্যবসায়ীদের গড়ে তোলা ছোটবড় প্রায় অর্ধশতাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে তাদের এমন দুরবস্থার কথা জানা যায়।

1

ঈশ্বরদীর বিভিন্ন বাজারে গো খাদ্যের মূল্য যাচাই করে জানা যায়, প্রতি ২৫ মুঠি খড়ের বোঝা ২৫০-৩০০ টাকা, ৫০ কেজির প্রতিবস্তা খুদ ১৭৫০ টাকা, ৩৭ কেজি গমের ভূষি'র প্রতিবস্তা ১৬৪০ টাকা, ৪৫ কেজির প্রতিবস্তা ধানের গুড়া ৮৬০ টাকা, ৫০ কেজির ফিড প্রতিবস্তা ৩৪০০ টাকা, ৪০ কেজির মসূরের ছাল প্রতিবস্তা ২০০০ টাকা, ভুট্টার আটা ৭০ টাকা। অন্যদিকে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকার হাট ও বাজারে গরু, মহিষ ও খাসির মাংষের বাজার যাচাই করে দেখা গেছে, গরুর মাংষ ৬৩০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, মহিষ ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাং ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা প্রতি কেজি হারে বিক্রি করা হচ্ছে। অরণকোলা হাট সংলগ্ন গরুর খামারি বাচ্চু প্রামানিক বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ব্যবসার এমন হাল হয়েছে যা বলার মত না। এমন চলতে থাকলে পথে বসতে হবে। কেননা যে দামে গরু কিনছেন বিক্রি করতে গেলে সেই দাম মিলছে না। আবার খামারে রেখে বিক্রি করতেও ভয় পাচ্ছেন। কেননা গরুর খাবারের যে হারে দাম বাড়ছে তাতে প্রতিদিন একটি গরুর খাদ্য লাগছে প্রায় ২০০ টাকার। সব মিলিয়ে খামারিরা মহাবিপদে রয়েছেন। খামারি মাহফুজুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে এমনিতেই গরুর বাজার ভীষণ খারাপ। সঙ্গে আবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে খাবারের আকাশচুম্বি দাম। আবার খাবারের দামের তুলনায় বাজারে মাংসের দাম কম। সব মিলিয়ে খামারিরা ভীষণ বিপদে আছেন। লস করতে করতে তাদের আর লস করার জায়গা নেই। খামারি ও ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম ও মমিন শেখ বলেন, নানা সিন্ডিকেটের কারনে গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি। যার ফলে খামারে গরু রেখে ব্যবসা করা এখন দুরূহ ব্যাপার।

এক সময়ের সফল খামারি এবং ব্যবসায়ী টুটুল তার বন্ধ খামার সম্পর্কে বলেন, 'গরু লালন পালন করতে যে টাকা খরচ করি বছর শেষে হিসেব করতে গেলে বিক্রির পর তার চেয়ে অনেক টাকা লোকসান হয়। গত কয়েক বছরে এত পরিমান লোকসান দিয়েছি যে কিস্তির সাহেবরা আমার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই গরুর ব্যবসা বন্ধ করেছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে