মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক আলোচিত কিশোরী ফেলানী হত্যা ট্রাজেডির ১৪ বছরপূর্তি মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে পালন করেছে ফেলানীর পরিবারের সদস্যরা। ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও ফেলানীর রুহের মাগফেরাতে বাদ যোহর কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর উপজেলার দক্ষিণ রামখানা কলোনীটারী জামে মসজিদে আয়োজন করা হয়েছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের। এখানে উপস্থিত ছিলেন ফেলানীর ছোট ভাই আরফান আলী, আক্কাছ আলীসহ তার স্বজন ও এলাকাবাসী। ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম মানবাধিকার সংগঠন অধিকার অয়োজিত ফেলানী দিবসের অনুষ্ঠানে ঢাকায় ছিলেন। মিলাদ ও দোয়া পরিচলানা করেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মামুনুল ইসলাম।
ছোটভাই আরফান হোসেন জানান, 'ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও আমরা প্রতিবছর ৭ জানুয়ারি বিএসএফ কর্তৃক বড় বোন ফেলানী হত্যা ট্রাজেডির দিনটি পালন করি। এবারও মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে পালন করলাম।'
এ সময় আরফান আলী তার বোন হত্যার বিচার দাবি তুলে ধরে বলেন, 'আমার বোন ফেলানী হত্যার বিচার দাবি গোটা বাংলাদেশবাসীর। ফেলানীর হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলে বাংলাদেশের সীমান্তে কোনো বাংলাদেশীকে হত্যা করতে পারত না বিএসএফ। সীমান্ত সুরক্ষিত থাকত।'
আরফান আলী তার বোন ফেলানীর হত্যার বিচার কার্যক্রম চালানোর জন্য বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান। এ সময় আরফান আলী তিনিসহ তার বোন মালেকা বেগম, কাজলী খাতুন ভাই জাহান উদ্দিন ও আক্কাছ আলীকে সরকারি চাকুরীতে যোগদানের সুযোগ দাবি করেন।
উলেস্নখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের আসাম রাজ্যের বনগাইগাঁও এলাকা থেকে পিতা নুর ইসলামসহ কিশোরী ফেলানী ভারতীয় দালালের মাধ্যমে নিজ বাড়ি বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করে। ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর হাজিটারী সীমান্তের ৯৪৭/৩এস আন্তর্জাতিক পিলারের পাশে ভারতীয় খেতাবেরকুটি সীমান্তে চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ ফেলানীকে আটক করে। পরে পাশে থাকা একটি ক্ষেতে নিয়ে অভিযুক্ত বিএসএফ অমিয় ঘোষসহ অন্য বিএসএফরা ফেলানীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে পাখি শিকারের মতো গুলি করে হত্যা করার পর তার লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুঁলিয়ে রাখে।
ফেলানী হত্যার এ নির্মম ঝুলন্ত ছবি ও খবর দেশী-বিদেশী মিডিয়ায় প্রকাশ হলে শুরু হয় বিএসএফের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ। বিক্ষোভ, মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হলে টনক নড়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফেলানী হত্যার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয় ভারতকে।