ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সীমান্তবর্তী উপজেলা ধোবাউড়া। কালক্রমে এই জনপদে রাস্থাঘাটসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হলেও পরিবর্তন আসেনি পরিবহণ খাতে। ধোবাউড়া থেকে ময়মনসিংহ যাতায়াতের একমাত্র আঞ্চলিক মহাসড়কে বছরের পর বছর ধরে চলছে ফিটনেসবিহীন লক্কর জক্কর বাস। এসব বাসকে এক কথায় মিনি বাস বললেই চলে। অন্য যেকোন রাস্তায় যেসব বাস চলাচল করার অনুমতি নেই সে সব বাস চলে ধোবাউড়া ময়মনসিংহ সড়কে।
দিনের পর দিন যাত্রীদের ভোগান্তী কারও নজরে পড়ে না। বাসের সিটগুলো ছোট হওয়ায় যাত্রীরা সোজা হয়ে বসতেও পারে না। ধুলোবালি লেগেই থাকে। দুর্গন্ধে বসে থাকাও কঠিন। এতে যাত্রী হয়রানি চরম আকার ধারন করেছে। বিকল্প কোন পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে চলাচল করে সাধারণ মানুষ।
ফিটনেসবিহীন ভাঙ্গাচুরা বাসের ঝাঁকুনিতে আতংক নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করছে ময়মনসিংহ শহরে। গাড়ির ফিটনেস না থাকায় বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিবহন খাতের এই অচলাবস্থা নিয়ে চরম ক্ষুব্দ সাধারণ মানুষ।
গত ২০ জানুয়ারি বিকালে ময়মনসিংহ থেকে ধোবাউড়াগামী ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী একটি বাসের চাকা পাংচার হয়ে একটি মোটর সাইকেলকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থালেই মারা যান মোটর সাইকেল আরোহী ধোবাউড়া হাসপাতাল মোড়ের ওষুধ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল। গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী সুমি আক্তার। এই দুর্ঘটনায় ধোবাউড়া উপজেলা জুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গত ১৫ বছরেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ধোবাউড়া নতুন বাস স্ট্যান্ডে। সরকারিভাবে ইজারা নেওয়া হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। নেই যাত্রী ছাউনি। যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করে। নেই ভালো মানের একটি টয়লেটও।
রহিম মিয়া নামে এক যাত্রী বলেন, ধোবাউড়া বাস স্ট্যান্ডের এতটায় খারাপ যে এক ঘণ্টার রাস্তা তিনঘণ্টায় যেতে হয়, বসা যায় না। আব্দুর রশিদ বলেন, ধোবাউড়ায় ভোগান্তির আরেক নাম বাস স্ট্যান্ড। কিন্তু ধোবাউড়ার কোন নেতা ও প্রশাসন এসব দেখেন না। ধোবাউড়া বাস কাউন্টার মাস্টার মোসলেম উদ্দিন বলেন, বাস স্ট্যান্ড সংস্কার না থাকায় ভালো মানের বাস আনা যায় না। তাছাড়া রাস্তাঘাটও ভালো না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।