পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলায় মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মিয়ারহাট বন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। মিয়ারহাট বন্দরে সংঘটিত ওই অগ্নিকান্ডে ৪টি গলিতে প্রায় শতাধিক দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাছাড়া আশেপাশের প্রায় ২০টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই অগ্নিকান্ডে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে মিয়ারহাট বন্দরের খাল পাড় পাখি পট্টি থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। স্থানীয়রা জানান, প্রথমে একটি দোকান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়, যা দ্রম্নত আশে পাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বন্দর এলাকায় অধিকাংশ দোকান কাঠের তৈরি হওয়ায় আগুন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
খবর পেয়ে নেছারাবাদ, বানারীপাড়া ও কাউখালীর ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট দ্রম্নত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে আগুনের ভয়াবহতা ও দ্রম্নত বিস্তারের কারণে পাশের উপজেলা বানারিপাড়া ও কাউখালী উপজেলা থেকে ২টি থেকে আরও দুটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটকে সহায়তার জন্য ডাকা হয়। প্রায় ৫ ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে ততক্ষণে শতাধিক দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে ইলেকট্রনিক্স, কাপড় এবং মুদি সামগ্রীর দোকান ছিল, যেখানে বিপুল পরিমাণ পণ্য মজুদ ছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তারা অতিরিক্ত পণ্য সংগ্রহ করেছিলেন, যা এই অগ্নিকান্ডে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।
অগ্নিকান্ডের সঠিক কারণ নিশ্চিত করা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদু্যতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ঘটনাস্থলে নেছারাবাদ ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) রায়হান মাহমুদ, নেছারাবাদ থানার ওসি বনি আমিন এবং বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বেলস্নাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বাজারের বিদু্যৎ ব্যবস্থা সংস্কার এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।