বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ববি'র হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কুপিয়েছে মুখোশ পরিহিতরা

থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে
যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে ঢুকে তিন শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে হেলমেট ও মুখোশ পরিহিতরা। মঙ্গলবার ভোরে ওই হলের ৪০১৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত, লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জি এম ফাহাদ এবং ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সিফাত ও ফাহাদকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। জিহাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সিফাত ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বের পদ প্রত্যাশী।

শেরেবাংলা হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ভোর পাঁচটার কিছু পর হলের চারতলায় ডাক-চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে সবার। পরে দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায় বাইরে থেকে ছিটকিনি আটকে রাখা হয়েছে। হলের অন্য সহপাঠীদের কাছে ফোন করে সাহায্য চাইলে তারাও একই অবস্থার কথা জানান। পরে অন্য হলের সহপাঠীদের ফোন করলে তারা এসে দরজা খুলে দেন। পরে চারতলার ৪০১৬ নম্বর কক্ষে দিয়ে দেখেন আহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দীন আহমেদ, তার অনুসারী ফাহাদ হোসেন ও জিহাদ আহমেদ পড়ে আছেন। কক্ষটির মেঝে দেয়ালে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। এরপর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর গণমাধ্যমকে বলেন, 'গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সিফাত ও লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাহাদের ওপর অতর্কিত হামলায় তারা গুরুতর আহত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি। পুরো বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখছে।'

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, 'আহতদের মধ্যে সিফাতের সারা শরীরে কোপানোর জখম রয়েছে। তার একটা হাত ভেঙে গেছে। তাকেসহ আরেকজনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'

আহত সিফাত বলেন, 'ভোর রাত সাড়ে ৫টার দিকে হেলমেট ও মুখোশ পরে ১০-১৫ জনের একটি দল তার কক্ষে প্রবেশ করে। তাদের সবার হাতে ছিল রামদা, বগি দাসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক, জিআই পাইপ ও রড। তারা কক্ষে প্রবেশ করে আমাদের তিনজনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে-কুপিয়ে আহত করে ফেলে রেখে গেছে।'

হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন দাবি করে সিফাত অভিযোগ করেন, 'রিয়াজ মোলস্নার নেতৃত্বে হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগতরাও ছিল।'

তবে হামলার সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে রিয়াজ মোলস্না সাংবাদিকদের বলেন, 'সিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। বহু মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত। এখন কারা তার ওপর হামলা করেছে সেটা বলতে পারব না।'

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, 'কারা হামলা করেছে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। ফুটেজ পেলে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা করা হবে।'

বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, 'হামলার পর তারা হলটি পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদর শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে