শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
বসল শেষ স্প্যান

যমুনায় দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেল সেতু

আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
  ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যমুনায় দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেল সেতু

অবশেষে প্রমত্তা যমুনার বুকে দৃশ্যমান হলো দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু 'বঙ্গবন্ধু রেলসেতু'। যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর শেষ (৪৯তম) স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো দেশের দীর্ঘতম রেলসেতুর পুরো অবকাঠামো। রেলসেতুতে যুক্ত হলো যমুনা নদীর দুই পার। এখন রেলপথ বসানোসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হলে এ সেতু দিয়ে চলবে ট্রেন। উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেলযাত্রীদের এখন সেটিরই অপেক্ষা।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর পশ্চিম অংশে ৫ থেকে ৬ নম্বর পিলারে ৪৯তম স্প্যান বসানো হয়। এর মধ্য দিয়ে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর সব স্প্যান বসানো হয়েছে। আর এ পর্যন্ত সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শেষ হলে আগস্ট নাগাদ পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল ও ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেতু দিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এতে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর নূ্যনতম ৩০ মিনিট (ক্ষেত্রবিশেষ দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত) সময় সাশ্রয় হবে। সেই সঙ্গে দিনে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রম্নতগতিতে সেতু পার হতে পারবে।

এদিকে, যমুনা রেলসেতুতে সর্বশেষ স্প্যান বসানোর খবরে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ উচ্ছ্বসিত। দেশি-বিদেশি ৫ সহস্রাধিক প্রকৌশলী-শ্রমিক দিন-রাত সুদক্ষভাবে সেতুটির বাস্তবায়নের কাজ করছে। দেশের বৃহৎ রেলসেতু নির্মাণের সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত তারাও।

সূত্র মতে, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে প্রতিদিন ৩৯টি ট্রেন পারাপার হয়। এতে সময় অপচয়ের পাশাপাশি শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। তবে নতুন রেলসেতুর কাজ শেষ হওয়ার পর ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহণের সুবিধা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ রুটে সহজে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণসহ সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথ নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এ সেতু।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল অংশের ভূঞাপুর উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের অংশের যমুনা নদীর ওপর এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে পৃথক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ সেতুর দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ। মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার।

সেতুর ৮৪ শতাংশের পাশাপাশি দু'পাশের ১৩ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ। সেতুর পূর্ব স্টেশন ও পশ্চিম স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, মূল সেতুর অবকাঠামোর কাজ শেষ। ফলে দৃশ্যমান হয়েছে রেলসেতুটি। অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করে টেস্টিং, কমিশনিং করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে বা ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে