সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠান আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

একনেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন
যাযাদি ডেস্ক
  ১০ মে ২০২৪, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৃহস্পতিবার গণভবনে খামারিদের গরুর দুধ আহরণে ব্যবহৃত একটি মিল্কিং মেশিন হস্তান্তর করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর -স্টার মেইল

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

সভায় পুঁজিবাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্তির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগকে কাজ করার নির্দেশও দেন তিনি। অনুষ্ঠানে খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প থেকে 'শেখ হাসিনা' নামটি বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও উপস্থিত সবার অনুরোধে এ নামটি রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আগামীতে আর কোনো প্রকল্পে নিজের নাম না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ সময় ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার।

সত্যজিৎ কর্মকার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন, শেয়ারবাজারে আমাদের যে সরকারি কোম্পানিগুলো আছে, সেগুলো যাতে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়। অর্থ বিভাগকে এ বিষয়ে কাজ করার জন্য অনুশাসন দিয়েছেন।

কী ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মধ্যে আনা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, তিনি সব প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির কথা বলেননি। তিনি অর্থ বিভাগকে বলেছেন, শেয়ারবাজারে উপযুক্ত হওয়ার বিষয়ে যাতে অর্থ বিভাগ কার্যকর উদ্যোগ নেয়। অর্থ সচিব যাচাই-বাছাই করবেন কারা কারা আসতে পারে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, সেটি বিবেচনা করে যাতে অর্থ বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠায়।

সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, 'একনেকে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা, আর উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়ন ৩৬০ কোটি টাকা।'

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন সমাপ্তযোগ্য প্রকল্প আমরা যেন অল্প কিছু টাকা দিয়ে হলেও শেষ করি। ৩৩৯টি সমাপ্তযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে এবার ৫টি প্রকল্প মালামাল জুনের মধ্যে ইনস্টল করা যাবে না। এ কারণে ৫টি প্রকল্প বাদে বাকি ৩৩৪টি প্রকল্প ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে।

প্রধানমন্ত্রীকে না জানিয়ে খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নাম ব্যবহার করায় তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন করেছেন। এ প্রকল্পে তার দুটি অবজারভেশন আছে। প্রথমত, শেখ হাসিনা নামটি বাদ দিতে হবে, দ্বিতীয়ত, প্রকল্পে মু্যরাল যেটি আছে সেটি বাদ দিতে হবে। তবে মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এ নাম পরিবর্তন করতে হলে এখন আইন পরিবর্তন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ভবিষ্যতে তিনি প্রকল্পে তার নাম ব্যবহারের অনুমতি দেবেন না। এটি প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতা।

পরিকল্পনা সচিব বলেন, আরেকটি অনুশাসন তিনি দিয়েছেন, নদীতে যেসব ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তা যাতে যথাযথ উচ্চতা মেনে নির্মাণ করা হয়। নদীর মূল স্রোতকে বাধাগ্রস্ত করবে এমন কোনো জায়গায় ব্রিজ নির্মাণ করা যাবে না।

যেসব প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে :একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব স্ট্যাটিসটিক সার্ভিস বেইজড অন পস্ন্যাটফর্ম প্রকল্প; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে 'শেখ হাসিনা মেডিকেল এ বিয়ালম, খুলনা স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প এবং চায়না এইড প্রজেক্ট অব বার্ন ইউনিট অফ চিটাগং মেডিকেল কলেজ হসপিটাল, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথক্রমে গুরুত্বপূর্ণ পলস্নী অবকাঠামো উন্নয়ন : পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলা প্রকল্প এবং বরিশাল জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড লেদার সেকটর প্রকল্প; শিল্প মন্ত্রণালয়ের ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে এ রূপান্তরকরণ (২য় সংশোধন), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঢাকা জেলায় বিদ্যমান সার্কিট হাউজ ভবনের স্থলে নতুন অত্যাধুনিক সার্কিট হাউজ ভবন নির্মাণ প্রকল্প; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর নবসৃজিত গাজীপুর (৬৩ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) : ডিডিএম অংশ (৩য় সংশোধন) প্রকল্প।

সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম, উবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে