যশোরের মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার জেলা বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপির দুই গ্রম্নপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এ উপজেলা। এ নিয়ে ১ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের লাগাম টানতে শনিবার রাতে উপজেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা বিএনপি। ওইদিন রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
তিনি বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের কার্যক্রম নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ এসেছে। কেন্দ্র থেকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত করেছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, দল ক্ষমতায় না থাকলেও কয়েক বছর ধরে উপজেলা বিএনপির মধ্যে দ্বিধা-বিভক্ত রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল ও অন্যপক্ষের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা। তবে ৫ আগস্ট রাজনীতির পটপরিবর্তন হওয়ার পরে এই গ্রম্নপিং দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। নেতাকর্মীদের ভাষ্য-নেতাকর্মীদের প্রতিশোধ পরায়ন, এলাকায় চাঁদাবাজি, দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়েই মূলত এই গ্রম্নপিয়ের দ্বন্দ্ব। এ বিরোধ পৌঁছেছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত। সেই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে পৌরশহরের রাজগঞ্জ মোড়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। একটি ওয়াজ মাহফিলে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর রাতে এটিকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মো. মুছা পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুর ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর লুটপাট ও আসবাবপত্র বের করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। একই পক্ষের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মাসুদ রানার দোকান ভাঙচুর ও সামনে থাকা একটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে মুছা পক্ষের অনুসারীরা উপজেলা বাজারে শোডাউন ও অবস্থান নেয়। তার প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার পর বাজারে অবস্থান ও শোডাউন দেয় ইকবাল গ্রম্নপ। এ সময় মুছা পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বাজারে কয়েকটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে ইকবাল গ্রম্নপ। পরে সেনাবাহিনী আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ইকবাল পক্ষ ও মুছা পক্ষের নেতাকর্মীরা পৌরশহরে মিছিল বের করলে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠে। আতঙ্কে সাধারণ লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। দোকানপাটও বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাঙচুর, ফাঁকাগুলি ও বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয় মণিরামপুর। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে দুই গ্রম্নপের শীর্ষ নেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।