গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকায় ফের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন টিএনজেড গ্রম্নপের শ্রমিকরা। প্রায় ৫৩ ঘণ্টা পর সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন তারা। তবে ঘণ্টাখানেক পর ফের রাস্তায় নেমে পড়েন শ্রমিকরা। এখন তারা বলছেন বকেয়া বেতনের টাকা হাতে দিতে হবে, তারপর সড়ক ছাড়বেন।
এর আগে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদ মিয়া, সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ, ও গাজীপুর মেট্রো পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে আসলে আন্দোলনরত পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বকেয়া বেতনের বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে মীমাংসার প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম বলেছিলেন, 'বকেয়া বেতনের বিষয়টি সরকারিভাবে পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হলে শ্রমিকরা তাদের অবরোধ তুলে নেন। এখন ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।'
এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন শ্রম ও কর্মস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এতেও শ্রমিকরা মহাসড়ক ছাড়তে নারাজ। তাদের দাবি কারখানায় মালিকপক্ষ অথবা মালিক নিজে এসে বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে, তারপরে মহাসড়ক থেকে তারা সরে যাবেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের চেষ্টায় দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও তা আটকে যায়।
নারায়ণগঞ্জেও ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়ক অবরোধ
এদিকে নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলে 'ক্রোনী গ্রম্নপের' দু'টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকশ' শ্রমিক সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি অবরোধ করে রাখেন।
বিক্ষোভ শুরুর পর শ্রমিকদের একটি দল বিসিক শিল্পাঞ্চলের ভেতরে কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালালে অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'নারায়ণগঞ্জ বিসিক শিল্পাঞ্চলে ৪৩২টি কারখানা রয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে অধিকাংশ কারখানায় লাঞ্চের আগেই শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।'
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কথা হয় 'আর-ফোর' নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক শাহীদা আক্তারের সঙ্গে।
তিনি বলেন, 'আমাদের লাঞ্চ হয় সাড়ে বারোটায়, কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর করায় ভয়ে কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।'
এদিকে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা বিসিক শিল্পাঞ্চলে অবস্থান নেন।
ক্রোনী গ্রম্নপের অবন্তী কালার টেক্স পোশাক কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক জাহানারা বলেন, 'গত বছর থেকে কারখানার মালিক বেতন নিয়ে গড়িমসি করে আসছে। গত আগস্ট মাস থেকে আমার বেতন বকেয়া। বেতন না দিয়েই গত মাসে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। অনেকের কাছে আমরা গেছি, কোনো সমাধান পাই নাই, আজকে তাই সড়কে নামছি আমর।'