শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২
অভিযোগ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে

হাতিয়ায় কৃষকদের ধান লুট

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হাতিয়ায় কৃষকদের ধান লুট

নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হিসেবে পরিচিত হাতিয়ার নিমতলীর চরে কৃষকদের ধান লুটের অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপি সদস্য খোন্দকার আবুল কালাম ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুলস্নাহিল মজিদ নিশান এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, খোন্দকার আবুল কালাম ও নিশান এবং হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়ন যুবদলের বহিষ্কৃত সভাপতি আবদুর রব শাহরাজের ইন্ধনে পূর্ব বিরবিরি ও মোহাম্মদপুর মৌজার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৪৫০ একরসহ ৯৫০ একর জমির ১০ হাজার মণ ধান ও নগদ ২ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাতিয়া উপজেলা ও জাহাজমারা ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ২ শতাধিক নেতাকর্মী ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জোটবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় জমিগুলো নিজেদের দখলে নেয়। কৃষকদের জমিতে ধান কাটতে বাধা দেয়। পরে তারাই ধান কেটে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, বিগত সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্দকৃত জমি চাষ করতে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী তার লোকজনদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তারা জমি চাষ করে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ মণ ধান অথবা ১০ হাজার টাকা দিতেন। চলতি বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের জমিতে চাষ করা ধান কাটতে বাধা দেন স্থানীয় বিএনপি নেতাসহ দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিএনপির তিনটি গ্রম্নপই মুক্তিযোদ্ধাদের জমির ধান দাবি করেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। বিএনপি নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার আবুল কালাম ও খোন্দকার আরমান ঝামেলা মিটানোর দায়িত্ব নেন।

পরবর্তীতে তারই ইন্ধনে উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কাছে ২ মণ ধান অথবা ২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। সে হিসেবে চাঁদা হিসেবে ৬০০ মণ ধান পান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের গ্রম্নপ। নিশান ও শাহরাজের গ্রম্নপ চাঁদা হিসেবে পায় ৪০০ মণ ধান। ধান কেটে লুটের সময় অস্ত্রের মুখে প্রায় ২ কোটি নগদ টাকাও লুটে নেয় মুক্তিযোদ্ধাসহ চরের বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে। ধান লুট ও লুণ্ঠনের মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বে ছিলেন হিমেল ও রাকিব। ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকরা একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে সহযোগিতা চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে শুধুমাত্র বিএনপি নেতা খোন্দকার আবুল কালামের বক্তব্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, 'অভিযোগটি মিথ্যা। কারণ আমি কোনো ধান পাইনি। অন্যরা পেয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।' এ ব্যাপারে নিশান ও শাহরাজের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবনে আল জায়েদ যায়যায়দিনকে বলেন, ধান লুটের অভিযোগ সত্য নয়। আর ধান কাটা শেষ হয়েছে অন্তত ১৫ দিন আগে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা বা সাধারণ কৃষকরা সেই ধান কেটেছে কিনা বা লুট হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হাতিয়া থানার ওসি মনিরুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে