শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্নীতির কারণে টিসিবির ৩৭ লাখ কার্ড বাতিল বাণিজ্য উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি
  ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দুর্নীতির কারণে টিসিবির ৩৭ লাখ কার্ড বাতিল বাণিজ্য উপদেষ্টা

টিসিবির এক কোটি কার্ডের মধ্যে প্রচুর দুর্নীতি ছিল। ফলে দুর্নীতির কারণে টিসিবির ৩৭ লাখ কার্ড বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, এনআইডি ব্যবহার করে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে এই কাজটা করেছে। এজন্য এক কোটি কার্ডের মধ্যে ৩৭ লাখ কার্ড নেই। যারা বেঠিক ছিল, ডুপিস্নকেশন ছিল তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

1

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাটের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, টিসিবি দিয়ে যে চাল বিক্রি করা হয়, সেটি আমরা পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করছি। আমরা বাজারে চাল সরবরাহ বাড়িয়েছি। ৫০ লাখ পরিবারকে (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি) কম দামে চাল দেওয়া হয়, সেটা শুরু হচ্ছে। টিসিবির স্মার্ট কার্ডধারী ৬৩ লাখ পরিবারকে এ সপ্তাহ থেকেই টিসিবি চাল দেওয়া শুরু করবে।

এক কোটি বলা হলেও ৬৩ লাখ পরিবারকে কেন স্মার্ট কার্ডের আওতায় পণ্য দেওয়া হচ্ছে এ বিষয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এক কোটি কার্ডের মধ্যে প্রচুর দুর্নীতি ছিল। একই পরিবারে একাধিক কার্ড ছিল। এনআইডি ব্যবহার করে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে এই কাজটা করেছে। এক কোটির মধ্যে যে ৩৭ লাখ কার্ড নেই, এর মধ্যে একজনও বাদ পড়েনি। যারা ছিল, যারা সঠিক প্রাপক, তাদের কাছেই পণ্য পাঠানো হচ্ছে। যারা বেঠিক ছিল, ডুপিস্নকেশন ছিল তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সংখ্যা একটিও বা কাউকে কমানো হয়নি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা আরও ৩৭ লাখ কার্ড বাড়াতে চাই। ক্রয় এবং বিপণনে স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে যদি এটা এক কোটি থেকেও বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়, আমরা সেটাও করব।

এদিকে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিতে ৬৩ শতাংশ শুল্ক ছিল, সেটা কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা আমদানি উদারিকরণ করছি। খাদ্য মন্ত্রণালয় বার্মা, পাকিস্তান ও ভারত থেকে সরাসরি কয়েক লক্ষ্য টন চাল আমদানি করছে। বাজারে যে একটা সাময়িক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ঠিক হয়ে যাবে। রোজার পণ্যে কোনো ধরণের সমস্যা হবে না।

রজমান মাসের প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রমজান নিয়ে আমরা সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত। কিছু জিনিসের বিষয়ে যেমন চালের বাজার নিয়ে আমরা বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা আমদানি উদারিকরণ করছি। চাল আমদানিতে ৬৩ শতাংশ শুল্ক ছিল, সেটা আমরা কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয় বার্মা, পাকিস্তান ও ভারত থেকে সরাসরি কয়েক লক্ষ্য টন চাল আমদানি করছে। আমাদের আমনের ভরা মৌসুম চলছে। এপ্রিল নাগাদ বোরো ধান আসবে। আমরা আশা করছি যে, এখন থেকে এপ্রিল আগামী তিন মাস বাজারে যে একটা সাময়িক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ঠিক হয়ে যাবে। এ ছাড়া অন্য কোনো পণ্যে সমস্যা নেই বলে আমার ধারণা। রোজার পণ্যে কোনো সমস্যা হবে না।

এখন আমনের ভরা মৌসুম, কিন্তু চালের দাম বেড়ে গেছে। আগে শুনতাম সিন্ডিকেট, এখন আগের জায়গায় নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে কি না, আপনারা কতখানি বাজার মনিটরিং করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আপনারা সাংবাদিক হিসেবে যদি আমাদের (সিন্ডিকেট) চিহ্নিত করে দেন, তাহলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে। আমাদের জানামতে আবহাওয়াগত কারণ, বন্যা, বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে হয়তোবা (চালের দাম বেড়েছে)...আমাদের নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত বলছে, আমাদের চালের কোনো ঘাটতি নেই।

তিনি বলেন, আমাদের সরকারি মজুতে কোনো ঘাটতি নেই। তারপরেও প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে আমরা যে ব্যত্যয়টা চালের বাজারে দেখছি, সেটাকে হ্যান্ডেল করার জন্য আমদানিকে আরও বেশি উদার করেছি। আমরা আশা করি, আমদানি শুরু হলে যদি কেউ মজুদ করে থাকে অন্যায্যভাবে, এই মজুতটা তারা ছাড়তে বাধ্য হবে এবং বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।

এই সময়ে তো বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। মানুষের কষ্ট হচ্ছে-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, নিশ্চিতভাবেই হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে সময়টা সাময়িক। কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই যে, সেটাতে সুইচ দিলে আগামীকাল বাজারটা ঠিক হয়ে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে