ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ হাজার টন চিনি ও মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ২১৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে ১১৫ টাকা ৪২ পয়সা কেজি দরে চিনি ও ৯৮ টাকা ৪৫ পয়সা কেজি দরে মসুর ডাল কেনা হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন চিনি কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্র্বতী সরকার। সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে ১১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকায় এ চিনি কেনা হবে। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৫ দশমিক ৪২ টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিনি কেনার লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৪৪ হাজার টন। এ পর্যন্ত
৩৫ হাজার টন কেনার চুক্তি হয়েছে। নতুন করে এখন আরও ১০ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদন দিলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্র্বতী সরকার। শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় এ ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৯৮ দশমিক ৪৫ টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ৮৮ হাজার টন। এ পর্যন্ত এক লাখ ২২ হাজার ৯৫০ টন কেনার চুক্তি হয়েছে। এখন আরও ১০ হাজার টন ডাল কেনার অনুমোদন দিলো উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
ভারত থেকে কিনবে ডিজেল:এদিকে, ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়ে ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের সভপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে এই ডিজেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জনা গেছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ২০২৫ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর 'অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি'র সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।
তারেই আলোকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়ে চুক্তির আওতায় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেডের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করে ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল (০.০০৫% 'সালফার') ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
এই ডিজেল আমদানির ব্যয় ধরা হয় ৯ কোটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ এক হাজার ১৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। প্রতি ব্যারেল ডিজেলের মূল্য ধরা হয়েছে ৫.৫০ ডলার। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় ২০১৬ থেকে ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে। পাইপলাইন নির্মাণের আগে এনআরএল থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ থেকে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে।