পঞ্জাবের অমৃতপাল সিংহ এবং কাশ্মীরের শেখ আব্দুল রশিদ নিজেদের কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। একজন ২০২৩ এবং একজন ২০১৯ সাল থেকে জেলবন্দি। জেলে বসেই ভোটে লড়েছেন।
জেলে বন্দি অবস্থাতেই ভারতীয় লোকসভা নির্বাচনে জিতলেন দুই প্রার্থী। পঞ্জাবের অমৃতপাল সিংহ এবং কাশ্মীরের শেখ আব্দুল রশিদ নিজেদের কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। আর তাতেই তৈরি হয়েছে জটিলতা। বন্দি অবস্থায় থাকাকালীন এই দু'জন আদৌ সাংসদ হিসেবে শপথ নিতে যেতে পারবেন কি না, পারলেও তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তানি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং লকআপে হামলা চালানোর অভিযোগে ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল পঞ্জাবের মোগা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অমৃতপালকে। 'ওয়ারিশ পঞ্জাব দে' সংগঠনের নেতা ছিলেন তিনি। ১৮ মার্চ সঙ্গীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন অমৃতসরের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে। তারপর থেকে বেশ কিছু দিন ফেরার ছিলেন। জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। গ্রেপ্তারির পর নিয়ে যাওয়া হয় অসমে। বর্তমানে সেখানেই ডিব্রম্নগড়ের একটি জেলে রয়েছেন অমৃতপাল।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সব খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিলিস্ন বাড়ির লড়াই'র পাতায়। সিপিএমের জামানত এবং মান রাখলেন দুই বুড়ো, ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা জলে গেল আলিমুদ্দিনের জেলে থাকাকালীনই। লোকসভা ভোটে লড়ার আবেদন জানিয়েছিলেন পঞ্জাবের এই খলিস্তানি নেতা।
আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। খাদুর সাহিব আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন কমিশনের কাছে। ৩৮.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন তিনি। কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়েছেন প্রায় ২ লাখ ভোটে।
আরেক জেলবন্দি জয়ী প্রার্থী হলেন জম্মু ও কাশ্মীরের আব্দুল রশিদ। তাকে অনেকে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ বলেও চেনেন। জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলা আসন থেকে জিতেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জঙ্গিদের অর্থসাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট থেকে তিহাড় জেলে বন্দি রশিদ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বা জিতলে লোকসভায় গিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণ- এই দু'জনেরই সাংবিধানিক অধিকার। তবে বন্দি হিসেবে আইনগত বাধা রয়েছে। শপথ গ্রহণের জন্য তাদের আগে জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিতে হবে। কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে সংসদে গিয়ে শপথ নিতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে তার পর আবার জেলে ফিরতে হবে দু'জনকেই।
শপথগ্রহণের পর লোকসভার স্পিকারকে এই প্রার্থীদের লিখিতভাবে জানাতে হবে, তারা সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। অনুপস্থিত হিসেবে তারা সংসদের সদস্য থাকতে পারেন কি না, ভোটাভুটির মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে জয়ী প্রার্থীরা কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তাদের দু'বছর বা তার বেশি দিনের জেল হলে সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ পদ খোয়াতে হবে তাদের। অমৃতপাল এবং রশিদের ক্ষেত্রে কী হয়, সেটাই এখন দেখার।