অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে টি২০ বিশ্বকাপে বুধবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উইকেট পাওয়ার পর নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস -ওয়েবসাইট
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এই ম্যাচটি জিতলে সেমিফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকত জিম্বাবুয়ে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটি জিততে পারল না ক্রেইগ আরভিনের দল। এতে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল তাদের। অ্যাডিলেড ওভালে বুধবার জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেট আর ২ ওভার হাতে রেখে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। সুপার টুয়েলভ পর্বে এটিই ডাচদের প্রথম জয়।
শুরুর তিন ব্যাটসম্যানের মতো শেষের ছয়জনও যেতে পারলেন না দুই অঙ্কে। নেদারল্যান্ডসের দুর্দান্ত বোলিং সামলে মাঝে কিছুটা লড়াই করলেন শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজা। তাতে কোনোমতে একশ পার করল জিম্বাবুয়ে। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় মাক্স ও'ডাওডের দায়িত্বশীল ফিফটিতে অনায়াস জয় তুলে নিল ডাচরা। টি২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বে দুটি জয় আছে নেদারল্যান্ডসের। দুটিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০৯ ও ২০১৪ আসরে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে প্রথম জয়ের দেখা পেল তারা। এতে সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন এখানেই শেষ হয়ে গেল জিম্বাবুয়ের।
রান তাড়ায় ১ ছক্কা ও ৮ চারে ৪৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেন ও'ডাওড। এবারের আসরে দ্বিতীয় ফিফটি করে এই ওপেনার জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটা হয় বেশ বাজে। পাওয়ার পেস্নতে ২০ রান তুলে তারা হারায় ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে পল ফন মেকেরেনের বলে ওয়েসলি মাধেভেরে হন বোল্ড। ব্র্যান্ডন গস্নভার পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন ক্রেইগ আরভিন ও রেজিস চাকাভাকে।
জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক আরভিন হন কট বিহাইন্ড। টানা দুই বলে পয়েন্টে ও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান চাকাভা। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। দুই বল পর হন এলবিডবিস্নউ। বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন উলিয়ামস ও রাজা। গস্নভারকে টানা চার-ছক্কা মেরে ঝড়ের আভাস দেন রাজা। ওই ওভারেই তাকে ফেরাতে পারত জিম্বাবুয়ে। কিন্তু কট বিহাইন্ড হয়েছেন ব্যাটসম্যান বুঝতেই পারেননি কেউ! পরে রিপেস্নতে দেখা যায় তা। ৩ চারে ২৮ রান করা উইলিয়ামসের বিদায়ে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি। দ্রম্নত রান তোলায় মনোযোগ দেওয়া রাজা ছক্কায় ওড়ান লোগান ফন বিককে। পরে গস্নভারকে ওভারে মারেন একটি করে ছক্কা-চার।
দলে ফেরা বাস ডে লেডেকে ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাজা। করেন তিনটি করে ছক্কা-চারে ২৪ বলে ৪০ রান। এরপর আর বেশিদূর এগোয়নি জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ১৯ রানে হারায় তারা শেষ ৪ উইকেট। তাদের ইনিংসে ৯ জনই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। নেদারল্যান্ডসের হয়ে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ফন মেকেরেন। দুটি করে প্রাপ্তি গস্নভার, ফন বিক ও ডে লেডের।
জবাবে রিচার্ড এনগারাভাকে ছক্কায় উড়িয়ে ভালো কিছুর আভাস দেওয়া স্টেফান মাইবার্গ টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। চতুর্থ ওভারে বেস্নসিং মুজারাবানির বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার। দ্রম্নত উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেন ও'ডাওড ও টম কুপার। মুজারাবানিকে ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন কুপার। ও'ডাওড ছক্কায় ওড়ান উইলিয়ামসকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ১৯.২ ওভারে ১১৭ (মাধেভেরে ১, আরভিন ৩, চাকাভা ৫, উইলিয়ামস ২৮, রাজা ৪০, শুম্বা ২, বার্ল ২, জঙ্গুয়ে ৬, এনগারাভা ৯, চাটারা ৬*, মুজারাবানি ১; ক্লাসেন ১/১৭, ফন মেকেরেন ৩/২৯, গস্নভার ২/২৯, ফন বিক ২/১৭, ডে লেডে ২/১৪, ফন মেরওয়া ০/৮)
নেদারল্যান্ডস : ১৮ ওভারে ১২০/৫ (মাইবার্গ ৮, ও'ডাওড ৫২, কুপার ৩২, আকারম্যান ১, ডে লেডে ১২*, অ্যাডওয়ার্ডস ৫, ফন মেরওয়া ০*; চাটারা ০/২২, এনগারাভা ২/১৮, মুজারাবানি ২/২৩, উইলিয়ামস ০/২১, রাজা ০/৬, জঙ্গুয়ে ১/২৫)
ফল : নেদারল্যান্ডস ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : মাক্স ও'ডাওড