মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

'হাথুরু বিশ্বসেরা কোচ হলেও আমার কাছে সেটা বিষয় না'

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
খালেদ মাহমুদ সুজন

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একজন খালেদ মাহমুদ সুজন। বিসিবি পরিচালক ছাপিয়ে কখনো কোচ, কখনো ম্যানেজার আবার কখনো তিনি হয়ে যান দলের টিম ডিরেক্টর। গত বিশ্বকাপেও টিম ডিরেক্টর হিসেবে ভারতে গিয়েছিলেন সুজন। টুর্নামেন্টে বাজেভাবে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় ক্ষোভ জানান সুজন।

জাতীয় দলের সঙ্গে আর কখনো কাজ করতে চান না খালেদ মাহমুদ সুজন। সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বার্ড পরিচালক ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানান, গত বিশ্বকাপে তাকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। তিনি তাই আর কখনই জাতীয় দলের আশপাশে যাবেন না।

বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে লম্বা সময় ধরে কাজ করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। হাথুরুর প্রথম দফায় কোচ হওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে বিভিন্ন সময় জাতীয় দলের হয়ে দায়িত্বে ছিলেন সুজন। সর্বশেষ গেল বছর ভারত বিশ্বকাপে ছিলেন দু'জন এক সঙ্গে। তবে সেখানে সুজনের কাজের পরিধি ছিল বেশ কম।

কাজের পরিধি কম থাকায় সে সময় গণমাধ্যমে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন সুজন। এবার কোচ হাথুরুসিংহকে নিয়ে মুখ খুললেন এই বোর্ড পরিচালক। গতকাল রোববার মিরপুরে মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। এ সময় টাইগারদের প্রধান কোচকে নিয়ে তিনি বলেন, 'হাথুরুসিংহে হয়তো বিশ্বের সেরা কোচ হতে পারে সেটা কোনো বিষয় না আমার কাছে। আমার কাছে আমি বাংলাদেশের সম্মানিত কোচ। আমার খেলোয়াড়রা সম্মান করে। আমার একটা ...আমার সম্মান আমি হারাতে চাই না।'

নিজের দায়িত্ব এবং বোর্ড সভাপতিকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন সুজন 'পাপন ভাই আমার অধিনায়ক উনি আমাকে যখন বলে যে ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে আমি করব। কিন্তু আমি মনে করি উনি আর আমাকে বলবেন না ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে। আমি মনে করি আমি কোনো সলিউশন না এখন আর। এত বড় বড় কোচরা আসছে যারা হাইলি পেইড, তাদের মধ্যে আমার না যাওয়াটাই ভালো।'

নিজের সম্মানের কথা উলেস্নখ করে বোর্ড সভাপতির কাছে অনুরোধও রেখেছেন সাবেক এই অলরাউন্ডার, 'আমি এখন আর ২৮-২৯ বছরের বালক না। আমার সম্মানটা এখন আমাকে রাখতে হবে। পাপন ভাইকে আগের মতোই সম্মান করি। কিন্তু আমি রিকোয়েস্ট করি পাপন ভাইকে যেন উনি আমাকে আর এ বিষয়ে কোনো কাজ করতে না বলেন।'

জাতীয় দলের সঙ্গে থাকতে চান না সুজন

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত খালেদ মাহমুদ সুজন। দলের পরিচালক হিসেবে লম্বা সময় ছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে ম্যাচে বিভিন্ন পরিকল্পনায়ও ভূমিকা ছিল তার। তবে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে টিম ডিরেক্টর হিসেবে দলের ছায়া হয়ে ছিলেন সুজন। কোথাও তার খুব বেশি সম্পৃক্ততা ছিল না বলেই সে সময় জানিয়েছিলেন সুজন। এমনকী টাইগার কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গেও তার বনিবনা না হওয়ার গুঞ্জন ছিল। এবার জানালেন বিশ্বকাপ দলে থাকাকালীন সময়ে সম্মানটুকুও পাননি।

এ সময় সুজন বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, 'আমি মনে হয় সমাধান না এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের। বাংলাদেশের আছে ভালো সমাধান। আর আমি এটাতে ইন্টারেস্টেডও (আগ্রহী) না। আমি মনে করি আমি ভালো চাকরি করছি। শেষ বিশ্বকাপে যা করেছি আমি মনে করি আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সঙ্গে ওটা যায় না আসলে। হয়তোবা আমি এত বড় কোচ না তারপরও আমার সম্মান আছে। আর আমার মনে হয় সেই সম্মানটা আমি শেষ বিশ্বকাপে পাইনি। সুতরাং আমি ওটা করতেও চাই না আর কোনোদিনও।'

সুজন আর এসব পদে যেতে চান না দাবি করে বলেন, 'আমি ওসব পদে যেতে চাই না। আমি খুশি আমার জীবন নিয়ে। আমি আবাহনীর কাজ করি, বিপিএলে কাজ করি, রাজশাহীতে ক্রিকেট একাডেমিতে কাজ করি। আমার দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য যদি কোনো সাহায্য করতে হয় করব। কিন্তু জাতীয় দলের ওই অ্যাসাইনমেন্টগুলো আমার জন্য ঠিক না আমি ডিজার্ভ করি না।'

জাতীয় দল থেকে আবাহনী স্ট্রং

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএলে) সবসময় তারকা নির্ভর দল গঠন করে আবাহনী। এবারের আসরেও তার ব্যতিক্রম নয়। তারকা সব ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়েছে আকাশী শিবির। নাজমুল হোসেন শান্ত, শরিফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, তাসকিন আহমেদ, জাকের আলি অনিকরা রয়েছেন এবারের দলে।

চলমান আসরে ৯ ম্যাচ শেষে টপে রয়েছে আবাহনী। দলটির প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন জাতীয় দল থেকে আবাহনী স্ট্রং। সুজন বলেন, 'শনিবার শান্তকে হাসতে হাসতে বলছিলাম তোর জাতীয় দল থেকে আমার আবাহনী এখন স্ট্রং।'

লিটন বিশ্রাম চেয়েছে আবাহনী থেকে সে বিষয়ে সুজন বলেন, 'জাকের এবং লিটন একটু বিশ্রাম চেয়েছে। লিটন বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমি লিটনের ব্যাটিং সবসময় পছন্দ করি। লিটনের ব্যাটিং দেখা অন্যরকম একটা ব্যাপার। আমি মনে করি মানসিকভাবে একটু বস্নক আছে রান করেনি প্রেসার থাকে। যেহেতু আমার এখন একটা ওই ফ্লেক্সিবেলেটি না থাকতো তাহলে লিটনকে ব্রেকটা দিতাম না সত্যি কথা বলতে আবাহনীতে। আমার ফ্লেক্সিবেলেটি আছে যে ব্যাটিং অর্ডার আমি লিটনকে বলেছি একটা ব্রেক নিয়ে আসুক কাম ফ্রেশ। ও হয়তো লিগের ম্যাচগুলো খেলবে না, সুপার লিগ থেকে খেলবে তখন থেকেই লিটনকে পাবো পুরোটায়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে