ম্যাড়মেড়ে ম্যাচের চেহারা বদলে গেল দ্বিতীয়ার্ধে। পিছিয়ে পড়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করেও পারল না মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে ফেডারেশন কাপের নকআউট পর্বে ওঠার পথে এগিয়ে গেল ঢাকা আবাহনী। কুমিলস্নার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিকালে গ্রম্নপ পর্বের ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে আবাহনী। তাদের জয়ের নায়ক মোহাম্মদ ইব্রাহিম দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান গড়ে দেন।
মোহামেডানের বিপক্ষে জয়টা যেন ভুলেই গিয়েছিল আবাহনীর সমর্থকরা। ২০২৩ সালের ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ২-০ গোলে জেতার পর ৬ বার দেখা হলেও মোহামেডানের বিপক্ষে একবারও জয়ের হাসি ছিল না আবাহনীর। চারটি জিতেছিল মোহামেডান, দুটি ম্যাচ হয়েছিল ড্র।
অবশেষে প্রায় দুই বছর ও ৬ ম্যাচ পর মোহামেডানকে হারানোর মধুর স্বাদ পেলো আবাহনী। মঙ্গলবার কুমিলস্নার ভাষাশহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের গ্রম্নপম্যাচে মোহামেডানকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আবাহনী। অনেকদিন পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে আবাহনী জয়টা পেয়েছে আবার বিদেশি ছাড়া দল নিয়ে।
আবাহনীর জয়ের নায়ক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ৭৪ মিনিটে মোহামেডানের সাবেক এই ফরোয়ার্ডের দারুণ এক ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় আবাহনী। মোহামেডানের সীমানা থেকে বলটি ওপরে ফেলেছিলেন শাকিল। তার সেই বল ধরে ডান দিক দিয়ে মোহামেডানের সীমানায় ঢুকে যান মোহামেডানের আরেক সাবেক ফুটবল শাহরিয়ার ইমন। তিনি বক্সে যে ক্রস ফেলেছিলেন সেই বলে পা চালিয়ে মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজনকে পরাস্ত করেন ইব্রাহিম।
অথচ এই গোলের ১০ মিনিট আগেই লিড নিতে পারতো মোহামেডান। বাঁ প্রান্ত থেকে সোলেমান দিয়াবাতের কর্নার থেকে বক্সে দাঁড়িয়ে ফ্লিক করেছিলেন মইন। দারুণভাবে সেই বল ক্লিয়ার করে দলকে বাঁচিয়েছিলেন আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফেরার তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মোহামেডান। উল্টো তারা ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়তে পারতো। ইনজুরি সময়ে বদলি মাহদির শট মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন সেভ করলে এক গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মারফুল হকের আবাহনীকে।
এটি ছিল এই মৌসুমে দ্বিতীয়বার দেশের দুই জনপ্রিয় ক্লাবের মোকাবিলা। লিগ ম্যাচের সাক্ষাতে আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী। এক মাস আগে এই ভেনু্যতে সেই হারের জবাব দিলো আবাহনী। এ জয় আবাহনীর ফেডারেশন কাপের কোয়ালিফাইং পর্বে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করলো। দুই ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ৬, তিন ম্যাচে মোহামেডানের ৩।
আর এ ম্যাচটি আবাহনীর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল মোহামেডানের জন্য। প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে হেরে বসার সেই খেসারত মোহামেডানকে দিতে হচ্ছে হয়তো। দুই হারে তারা এখন গ্রম্নপে তিনে নেমে গেলো। শীর্ষে ও দুই থাকা রহমতগঞ্জ ও আবাহনী দুই দলেরই পয়েন্ট ৬ করে। বাকি দুই ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই পরের রাউন্ডে উঠে যাবে আবাহনী ও রহমতগঞ্জ। তখন মোহামেডান শেষ ম্যাচে জিতলেও লাভ হবে না। গতবারের রানার্সআপ সাদাকালোদের সামনে পরের রাউন্ডে ওঠার সম্ভাবনা কাগজ-কলমে টিকে থাকলেও বাস্তবে কম।