দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন। সেখান থেকে বাংলাদেশ দল শুক্রবারই পৌঁছেছে পাকিস্তানে। নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রম্নপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচ খেলবে রাওয়ালপিন্ডিতে। গত বছর এই ভেনু্যতে টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে মুখিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তরা।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের কাছে হেরে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার পথ কঠিন হয়ে গেলো বাংলাদেশের। আগামী ২৪ ফেব্রম্নয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রম্নপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হারের পর শান্ত বলেছেন, 'আমরা সম্প্রতি পাকিস্তানে খেলেছি, তাই রাওয়ালপিন্ডির কন্ডিশনে ছেলেরা দ্রম্নত মানিয়ে নিতে পারবে।'
ভারতের বিপক্ষে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর তাওহদি হৃদয় ও জাকের আলী অনিকের ইনিংসে বাংলাদেশ ২২৮ রানের সংগ্রহ পায়। মামুলি টার্গেটে ভারতকে কিছুটা হলেও চাপে রাখতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিস ফিল্ডিং ও কিছু ক্যাচ ধরতে না পারায় সেই সুযোগও হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। শান্ত বলেছেন, 'হৃদয় ও জাকের দারুণ ব্যাটিং করেছে, তবে আমরা ফিল্ডিংয়ে কিছু ভুল করেছি। ক্যাচ হাতছাড়া ও রানআউট মিস না হলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো। ভারতের স্পিনারদের বিপক্ষে হৃদয় ও জাকেরের ব্যাটিং সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করি, তারা এভাবেই পারফর্ম করতে থাকবে।'
অনেকেই মনে করছেন, স্পিনবান্ধব কন্ডিশনে তিনজন পেসার না খেলিয়ে একজন বাড়তি স্পিনারের দরকার ছিল বাংলাদেশের। এ নিয়ে অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেন শান্ত, 'একাদশে অতিরিক্ত স্পিনার দরকার ছিল কি না... আমি তা মনে করি না। নতুন বলে উইকেট পেলে ম্যাচের পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত।'
মাত্র ২২৮ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করা যায় না, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের যা হওয়ার তাই হলো। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তাওহীদ হৃদয়ের বীরোচিত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ এই রান করে। সেই লক্ষ্যটা শুবমান গিলের অসাধারণ ইনিংসে ৪৭ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে ভারত। ৬ উইকেটে ম্যাচ হারের পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হারার কারণ জানান।
বিশেষ করে টপ অর্ডার ৫ ব্যাটারের মধ্যে তিনজন রানের খাতা খুলতে পারেননি। তানজিদ হাসান তামিম খেলেছেন ২৫ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ খেলেছেন ৫ রানের ইনিংস। প্রথম ৫ ব্যাটারের কাছ থেকে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না আসাতেই মূলত স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান হয়নি। ম্যাচ হারের কারণ হিসেবে শান্ত বলেন, 'আমি মনে করি প্রথম পাওয়ার পেস্নতে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি সেখানেই আমাদের ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে। ওই অবস্থা থেকে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের পক্ষে সেরে ওঠা কঠিন। মাঠে অবশ্য আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি। বেশ কিছু ক্যাচ ছেড়েছি। রান আউট মিস করেছি। ওই সুযোগগুলো যদি কাজে লাগানো যেত, তাহলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হলেও হতে পারত।'
৩৫ রানে ৫ উইকেট পতনের পর জাকের ও হৃদয় মিলে দলের হাল ধরেন। রেকর্ড ১৫৪ রানের জুটিতে ২২৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে শান্তরা। দুজনের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করে অধিনায়ক বলেছেন, 'হৃদয় ও জাকের যেভাবে ব্যাটিং করেছে সেটা ছিল অসাধারণ। এই ধরনের উইকেটে স্পিনাররা সুবিধা পায়। বল ঘোরে। সেখানে হৃদয় ও জাকের খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। আমি মনে করি না আমাদের স্পিন বোলারের ঘাটতি ছিল। মাহমুদউলস্নাহ ইনজুরিতে আক্রান্ত। তবে আমাদের পেসাররা কিন্তু খারাপ বোলিং করেনি। যদি আমরা শুরুতে উইকেট তুলে নিতে পারতাম তাহলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হতেও পারত।'