কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ না হওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। উন্নয়ন কর্মকান্ডেও চলছে মন্থরগতি। অর্থ সাশ্রয়ে বাদ দেওয়া হচ্ছে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সরকারিভাবে কৃচ্ছ্র সাধন চলছে। ব্যয়ের লাগাম টানতে মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্ধারিত বরাদ্দের বাইরে নতুন অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। অর্থনৈতিক সংকটের মুখে অর্থবছরের শুরু থেকে নানা পদক্ষেপের পরও পরিস্থিতি খুব বেশি উন্নতি হয়নি। যে কারণে ২৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্বসহ চলতি বাজেট থেকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কো-অর্ডিন্যান্স কাউন্সিল বৈঠকে নেওয়া হয় এ সিদ্ধান্ত। অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ অর্থ সচিব এবং আর্থিক বিভাগের সচিবও ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট গণ-অভু্যত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেটি কাটছাঁট করে ৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনছে। জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ-উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশে প্রবৃদ্ধির হার কম হবে, এমন পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ। এর প্রভাব পড়বে সার্বিক অর্থনীতির ওপর। আর অর্থনীতি খারাপ হলে সন্তোষজনক হারে রাজস্ব আহরণও কমবে। যে কারণে সরকার বাজেট কাটছাঁট করছে। তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আহরণ কমলে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে সরকারের অর্থ ব্যয়ের ওপর। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষতি ঠেকাতে কর ফাঁকি কমানোর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা এনবিআরের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সূত্রমতে, কো-অর্ডিন্যান্স কাউন্সিল বৈঠকে সরকারের আয়-ব্যয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে এনবিআর কর ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং করবহির্ভূত আয় ৪৬ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।