শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বাড়িতে মায়ের মরদেহ রেখে অশ্রুসিক্ত চোখে দাখিল পরীক্ষা দিল দিহান

গফরগাঁও প্রতিনিধি
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৭
বাড়িতে মায়ের মরদেহ রেখে অশ্রুসিক্ত চোখে দাখিল পরীক্ষা দিল দিহান

গতকাল রাত ১২টায় নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আকান্ত হয়ে মারা গেছেন মা। সকালেই ছেলের পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে অশ্রুসিক্ত চোখে হাদিস বিষয়ের দাখিল পরীক্ষা দিল দিহান আলম ।

আজ বুধবার গফরগাঁও জে এম কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় দিহান আলম। পরীক্ষা শেষে দুপুর ৩টায় সে মায়ের জানাজায় অংশ নেয়। জানাজা শেষে তার মাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দাখিল পরীক্ষার্থী দিহান আলম মশাখালী ইউনিয়নের বেলাব গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে । সে মুখীশাহ মিসকিন দাখিল মাদ্রাসার ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী।

দিহানের পরিবার ও মাদ্রাসা সুত্রে জানায়,দিহান আলমের মা খাদিজা বেগম (৩৫) বেশ কয়েকদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভোগছিলেন। গত মঙ্গলবার রাত ১২টায় হঠাৎ হৃদরোগে আকান্ত হয়ে তার মৃতু্্য হয় । মায়ের মৃত্যুর সংবাদে ভেঙে পড়ে দাখিল পরীক্ষার্থী দিহান আলম।

বুধবার সকাল থেকে মায়ের মরদেহের পাশে বসে থাকে দিহান। স্বজনেরা তাদের নানাভাবে মা হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেন। পরে স্বজনদের কথায় মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে যায় দিহান। তার সঙ্গে এক স্বজনকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

এদিকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পর স্বজনরা তাদের মায়ের মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নেন। শিক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গফরগাঁও জে এম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আতাউর রহমান , মুখীশাহ মিসকিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার আশরাফ উদ্দিন ,কেন্দ্র সচিব কামরুল ইসলাম ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওই কেন্দ্রে ছুটে যান। দিহান আলমকে সান্ত্বনা দেন। কেন্দ্রের বাইরে তাদের স্বজনের সঙ্গেও কথা বলেন।

পরীক্ষা শেষে মায়ের জানাজার জন্য বাড়িতে যায় এবং দুপুর ৩টায় জানাজার পর তাদের মায়ের দাফন সম্পন্ন হয়। দিহানের সহপাঠী দাখিল পরীক্ষার্থী বাইজিত জানায়, মা তাদেরকে অনেক ভালোবাসতেন। মা চাইতেন সে যেন পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করতে পারে। তাই মায়ের কথা ভেবেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তারা।

এদিকে পরীক্ষা কেন্দ্র গফরগাঁও জে এম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আতাউর রহমান বলেন, দাখিল পরীক্ষার্থী দিহান আলমের মা হারানোর বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। তার কক্ষের পর্যবেক্ষকসহ আমি কেন্দ্রে তাদের খোঁজখবর রেখেছি। পরীক্ষার কক্ষে মাঝে মধ্যে কান্নায় ভেঙে পড়লে সহপাঠীরা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে পরীক্ষা ভালো হয়েছে দিহানের। আমি দিহানের মায়ের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে