শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

নির্বাচিত হয়েই ধান কাঁটলেন ভাইস চেয়ারম্যান কনক

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
  ২৩ মে ২০২৪, ১৪:৫২
ছবি-যায়যায়দিন

শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েই অসহায় ও গরীব কৃষকদের ধান কাঁটা শুরু করছেন আবু হামযা কনক। সে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ও এবছর এলএলবি’র চুড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার পিতা মুকুল তালুকদার, মাতা আসমাউল হোসনা। দুই ভাই বোনের মধ্যে ছোট কনক ও বোন মনিরা বিবাহিত। ছোট বেলা থেকেই একজন কর্মঠ ও দক্ষ। নীতিতেও ছিল অটল।

করুনার মহামারির সময় যখন মানুষ শ্রমিক সংকটে ক্ষেতে ধান কেঁটে আনতে পারছিল না, তখন কনক ছাত্রলীগের অন্যান নেতা ও কর্মীদের নিয়ে পাশে দাঁড়ায় ওইসব কৃষকদের। ধান কাঁটা থেকে শুরু করে আটি বেঁধে মাথায় করে এনে দেয় কৃষকদের বাড়িতে। মানুষের কাছাকাছি ও ভালবাসার শুরুটা ছিল এমনই। শুধু তাই নয় অসহায়দের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দেওয়া ও মাস্ক বিতরণসহসচেতনতা সৃষ্টি করেন মানুষের মধ্যে। তখন থেকেই কনক মানুষের বিশ্বাস ও ভালবাসা পেতে শুরু করে। সেই কনক আজ নকলা উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান।

গত মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। বিজয়ী হয়েই বুধবার (২২ মে) সকাল থেকেই আবারও ফিরে যায় সেই পূর্বের ন্যায় গরীব ও অসহায় কৃষকদের ধান কাঁটতে। যারা অর্থের অভাবে ধান কাঁটতে পারে না এমন সংবাদ পেলেও ছাত্র লীগের কর্মী বাহিনী নিয়ে কাস্তে হাতে মাঠে নেমে পড়েন ভাইস চেয়ারম্যান আবু হামযা কনক। উপজেলার হুজুরীকান্দা ও চরমধূয়া গ্রামের তিন কৃষকের ৬০ শতক জমির ধান কাটেন এবং আটি বেঁধে বাড়িতে পৌছে দেন। আজও সকাল থেকে মাঠে নেমে পড়েছেন ধান কাটতে।

আবু হামযা কনক বলেন, আমি আজ নকলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি মানুষের ভালবাসার কারনে। আমি জনপ্রতিনিধি হয়েছি জনগনের কারনে এবং জনগনের জন্য। আমি আগে যেমন ছিলাম এখনও ঠিক তেমনই থাকতে চাই। এ বিজয় আমার না, এ বিজয় নকলাবাসাীর, এ বিজয় ছাত্র লীগের। আমি মনেপ্রানে বিশ্বাস করি মানুষকে ভালবাসলে এবং তাদের জন্য কিছু করলে বৃথা যায় না। মানুষ এর প্রতিদান দিয়েছেন এবং আমি পেয়েছি। মহান আল্লাহ তাআলা যেন সারাজীবন এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেন। সকলের সহযোগিতা চাই।

উল্লোখ্য, নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা ছাত্র লীগের আহবায়ক আবু হামযা কনক চশমা প্রতীকে ৩১ হাজার ১৯৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু পেয়েছেন ২৭ হাজার ১৪২ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্যান্যদের মধ্যে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. মামুন হোসেন উড়োজাহাজ প্রতীকে ১১ হাজার ২৫৭ ভোট, ৭নং টালকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আকন্দ তালা প্রতীকে ৫ হাজার ৪৫১ ভোট, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. রেজাউল করিম টিউবওয়েল প্রতীকে ৪ হাজার ৫৬১ ভোট পেয়েছেন। ৭৯ টি ভোট কেন্দ্রের ৪৬৪ টি ভোটকক্ষে (বুথে) গোপন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হয়। উপজেলার ১ পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন। এতে পুরুষ ভোটার ৮৮ হাজার ৩৭৬ জন এবং নারী ভোটার ৯১ হাজার ২৩০ জন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে