সম্প্রতিদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের বেপোয়া গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন মাদরাসা শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন (১৭)। আন্দোলনে তার ডান চোখ ও মাথাসহ শরীরের ২৯ টি স্থানে গুলি লাগে।অস্ত্রপাচারের পর এখনও তার শরীরে রয়ে গেছে ১৩ টি গুলি। দৃষ্টি হারাতে বসা ইমরান পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রত্যান্ত খানমরিচ ইউনিয়নের দুধবাড়িয়া গ্রামের হতদরিদ্র জহুরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় পিতার সঙ্গে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন ইমরান । সে সময় পুলিশ ওপর থেকে মিছিলে ছররা গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয় সে।স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আহতবস্থায় সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে তার শরীর থেকে বেশ কয়েকটি গুলি বের করা হয়। পরে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়।হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে চোখের দু'টি গুলি বের করতে হবে। কিন্তু অর্থাভাবে সেখানে চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসেন সে ।
ইমরান বাবা দরিদ্র জহুরুল ইসলাম জানান, চার সদস্যের সংসার তাদের। আমি দিনমজুর হিসেবে ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতাম।আন্দোলনের সময় বাবাকে দেখতে যান সে। গত ৫ আগস্ট 'লংমার্চ- টু ঢাকা' কর্মসূচির ডাক আসলে বাবার সঙ্গে ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন ইমরান। সেসময় পুলিশ ওপর থেকে মিছিলে ছররা গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয় সে ।
ইমরান আরও জানান,তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনও ১৩ টি গুলি রয়েছে। তার ডান চোখেই রয়েছে দু'টি গুলি। গুলিবিদ্ধ চোখে তিনি এখন ঝাপসা দেখছেন।সমস্ত শরীরেও অসহ্য ব্যাথা নিয়ে দিনাদিপাত করছে।শুধু ওষুধ সেবন করে সাময়িক ব্যাথা কমিয়ে রাখলেও তার প্রকৃত চিকিৎসা হচ্ছে চোখে অস্ত্রেপাচার করতে হবে।
ইমরানের দরিদ্র পিতা অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে গণমাধ্যম কর্মিদের বলেন, একদিন কাজ না করলে সংসারের সকল সদস্যের পেটে ভাত জোটে না। এমবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাবেন কিভাবে? তিনি সমাজের সবার নিকট আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, ছেলেটির সুচিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে ।
যাযাদি/ এম