বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এদেশের মানুষের বাঁচার অধিকার ছিলো না এদেশের মানুষ আদালতে গিয়ে বিচার পেতো না। এদেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা শেষে চাকরি পেতো না। এমন একটি দেশ আমরা পেয়েছিলাম তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতেন আমি সবকিছু বলবো না আমিও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। আমি শুধু একটা কথা বলতে চাই গত ১৬ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় দিবস নয় ভারতের বিজয় দিবস, তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ও জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিজয় দিবস উপলক্ষে আমার প্রশ্ন হলো চেতনার আওয়ামী লীগ তখন কোথায় ছিলো।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চিরিরবন্দর উপজেলা শাখার আয়োজনে রানীরবন্দর বাজারের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, প্রিয় বাংলাদেশের বিজয় দিবস স্বীকার করে না যারা আপননি তাদের কোলে ঠাঁই নিয়েছেন। আর বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। আপনার আমলের সাথে চেতনার মিল নাই। আপনাদের আমলে বাংলাদেশকে আপনারা অন্য দেশের কাছে বন্ধক রেখেছেন। আমরা পিন্ডির হাতে মুক্ত হইনাই দিল্লির হাতে বন্দি হওয়ার জন্য। এদেশের মানুষেরা সত্যিকারের স্বাধীনতা ভোগ করতে চায়। ৫৩ বছর পক্ষের বিপক্ষে কথা বলে সংখ্যাগুরু সংখালঘুর মধ্যে সংঘাত লাগিয়ে আপনার জাতীর বহু ক্ষতি সাধন করেছেন অবশেষে আপনারা বলেছিলেন উন্নয়নের মহাসড়ককে জাতিকে তুলে এনেছেন আপনারা বলেছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এখন উন্নয়নের সবকিছু বের হয়ে আসতেছে বস্তা বস্তা টাকা এক লাখ দুই লাখ নয় ২৬ লক্ষ কোটি টাকা পচার করছেন আর বড় বড় গলা ফাঠাতেন । কথায় আছে চোরের মায়ের বড় গলা।
জামায়াতে ইসলামী আমির বলেন, সম্মানিত দেশবাসী আমরা নতুন বাংলাদেশের অপেক্ষায় আছি। সেই বাংলাদেশটা এমন হবে আমরা চাই বৈষম্য নয় ন্যায়বিচারের একটি বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ আমরা করতে চাই। যখন ন্যায়বিচার সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে তখন আলহামদুলিল্লাহ ১৮ কোটি মানুষের একজনকেও আর আর নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতে হবে না।তখন ন্যায় বিচারের স্বার্থে রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব হবে যার যেটা অধিকার সেটা তার ঘরে তাহ হাতে পৌঁছে দেওয়া। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই আমরা সন্তানেরা বড় হয়ে সুশিক্ষা পাবে স্বাস্থ্য সেবা পাবে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে ভালো শিক্ষা নিয়ে যখন তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হবে এক টুকরা মূল্যহীন সার্টিফিকেট নিয়ে বের হবে না দুই হাতে কাজ নিয়ে বের হবে ইন শা আল্লাহ। ঐ বাংলাদেশটা আমরা চাই যেই বাংলাদেশে আমাদের মা বোনেরা ঘরে, চলার পথে কর্মস্থলে, সকলের স্থানে নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারবেন থাকতে পারবেন। সমাজের উন্নয়নের স্বার্থে পুরুষের পাশাপাশি যার যেখানে যোগ্যতা আছে প্রয়োজন আছে সেখানে মর্যাদা এবং নিরাপত্তার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন ইনশাআল্লাহ সেদিন আমাদের মা বোনেরা এদেশে বসবাস করে গর্বিত হয়ে বলবেন আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমরা সেই দেশটার অপেক্ষায় আছি যে দেশে আর হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান এর মধ্যে আর কেউ দাঙ্গা বাধাতে পারবে না,আমরা সেই দাঙ্গাবাধাতে দেব না। আমরা বলেছি মেজরিটি মাইনরিটি মানিনা আমরা বলেছি এই জন্মগ্রহণ করেছে তারা সমান অধিকারের ভিত্তিতে তারা এদেশের মর্যাদাবান নাগরিক একজন মুসলমানের যে অধিকার থাকবে একজন হিন্দুরও সেই অধিকার থাকবে একজন বৌদ্ধেরেও সেই অধিকার থাকবে একজন খ্রিস্টানেরও সেই অধিকার থাকবে। সেই নিরাপত্তার বলয়ের চাদরে থাকা দেশটিতে কোন মসজিদ পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন পরবে না কোন মন্দির,প্যাগোডা চার্জ,গির্জা পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। সমস্ত মানুষ যার যার নিজে নিজে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর আমীর ডা. শফিকুর রহমান সকালে বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন এবং পরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড়মাঠে ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।যাযাদি/ এসএম