বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

রোয়াংছড়িতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৬
রোয়াংছড়িতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
ফাইল ছবি

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়ন এলাকার উন্নয়নে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা,কাবিখা এবং রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর) কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় কিস্তির নগদ অর্থের বিপরীতে প্রকল্প গ্রহণে কার্যক্রম শুরু হতে না হতে বিভাজনের নয়-ছয় করা ৪নং নোয়াপতং ইউপি চেয়ারম্যান চনুমং মারমা বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন শাখাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যলয়ে কর্তৃক গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা, কাবিখা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর) কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় কিস্তিতে নগদ অর্থ ও খাদ্যশস্য গম বিপরীতে প্রকল্প তালিকা প্রেরণে ৪টি ইউনিয়নে প্রকল্প বিভাজন করে উপবরাদ্দ হিসেবে ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়নের প্রাপ্ত উপবরাদ্দকৃত নগদ অর্থের কাবিটা থেকে ১৪,২৩,১৪৩.০২ টাকা এবং টিআর থেকে ১১,৯৬,০৩৪.৯৬ টাকা। এতে নগদ অর্থ দাঁড়ায় মোট ২৬,১৯,১৭৭.৯৮ (ছাব্বিশ লক্ষ উনিশ হাজার আটানব্বই টাকা)।

এছাড়া খাদ্যশস্যের থেকে ১১.৬৬২১ মেঃটন গম। প্রাপ্ত উপবরাদ্দকৃত নগদ অর্থ ও খাদ্য শস্যসহ অনুমানিক ৩২লক্ষাধিক টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়নে কয়েকজন মেম্বারগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নতুন অর্থ বছরে প্রাপ্ত বরাদ্দ বিষয়ে বলেন সাড়ে ৩ লক্ষ থেকে ৮লক্ষাধিক করে বিভিন্ন কেটাগড়িতে প্রকল্প ভাগ করা হয়ে গেছে। তবে ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মংহ্লাগ্য মারমাকে প্রকল্প দেওয়া হয়নি। কেন বা কী কারণে প্রকল্প দেওয়া হয়নি তা আমরা জানে না। এ বিষয়ে খোদ্দ ইউপি চেয়ারম্যান বলতে পারবেন।

এছাড়া চেয়ারম্যান চনুমং মারমা বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তীর রয়েছে। জানা যায়, এলজিএসপি বর্তমানে ইউনিয়ন তহবিল, ভিজিডি, ভিজিএফ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশেষ বরাদ্দ কর্তৃক বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে প্রকল্পসহ সত্য প্রমাণ চাইলে সঠিক তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয়রা। ৪নং নোয়াপতং ইউপি ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মংহ্লাগ্য মারমা বলেন ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা, কাবিখা ও খাদ্যশস্য কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় কিস্তিতে নগদ অর্থ ও খাদ্যশস্য গম বিপরীতে প্রকল্প তালিকা প্রেরণে উপবরাদ্দ প্রদান করা হয়।

সরকারে বরাদ্দ দিলেও পূর্বে ন্যায় আমাকে প্রকল্প না দিয়ে নিজেদের লোককে দিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করে ভোগ করতে চাচ্ছেন। আমরা প্রায় ৩বছর পার হয়ে ৪ অর্থ বছর চলছে। ইতিমধ্যে অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষে অন্যান্য ইউনিয়নের মতো আমাদের নোয়াপতং ইউনিয়নে সরকার থেকে যথেষ্ট বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু আমার মনে একটা দু:খ থাকলো, বরাদ্দ দিলেও প্রতিবারের মত আমাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান চনুমং মারমা তার ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ দলের দলীয় কর্মী মেম্বারদের বাছাই করে প্রকল্প দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি চেয়ারম্যান দায়িত নেওয়ার পর থেকে নামে মাত্র প্রকল্প বানিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম করে সীমাহীন সেচ্ছাই চারিতা চরমে পৌঁছেছেন।

তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারেননি এ পর্যন্ত। গেল ৫আগস্ট ২০২৪ইং এর পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে দোসর ও তিনি একজন সহ সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটিতে পদেধারী ব্যক্তি। ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় চনুমং মারমা ক্ষমতা অপব্যবহার করে আমাকে প্রায় ৪ বছর যাবত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। আমি একজন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) করছে বলে মেম্বার হলেও বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তাই আমার ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন এবারও উপবরাদ্দ প্রদানকৃত অর্থের লুটেপুটে খাওয়া ফন্দি করছে। তাই আমাদের ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের প্রদানকৃত বরাদ্দগুলো সঠিক ও সুষম বন্টনের সমস্যা সমাধান না হওয়ার পর্যন্ত সকল প্রকল্প কার্যক্রম বন্ধ ও গৃহীত প্রকল্প বাতিল করা জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

তারপরো কোন সমাধান না হলে ডিসি স্যারের কাছে যাব বলে জানান ৩নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মংহ্লাগ্য মারমা। অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আগেও একটি অভিযোগ করা হয়েছে। ৪নং নোয়াপতং ইউপি চেয়ারম্যান চনুমং মারমা সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি পরিষদের মেম্বারদের সাথে আলোচনা করে তাকে প্রকল্প দিয়েছে। সেই যদি অভিযোগ করে থাকে তাহলে আমি কি করব।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিলটন দস্তিদার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অভিযোগ বিষয় ও বরাদ্দ পরিমাণ আমার জানা নাই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে বলে দায়সারা কথা বলেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন প্রকল্প বিষয়ে অভিযোগপত্র এখনো আমার হাতে আসেনি। তবে কম্বল বিষয়ে একটা অভিযোাগ পেয়েছি। যদি প্রকল্প সংক্রান্ত অভিযোগ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাযাদি/ এমএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে